হাকালুকি হাওর কোন জেলায় অবস্থিত? (ভ্রমণের সকল তথ্য)
বাংলাদেশের এবং এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বড় হাওরটির নাম হলো হাকালুকির হাওর। এটি পাঁচটি উপজেলার ১১ টি ইউনিয়ন নিয়ে বিস্তৃত। যদি আপনি কখনো এখানে বেড়াতে আসতে চান এর প্রাকৃতিক অপরুপ সৌন্দর্য দেখে আপনি নিজেই মুগ্ধ হয়ে যাবেন। এই হাওরের প্রাকৃতিক পরিবেশ বছরের বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন রূপ ধারণ করে।
বর্ষার সময় এখানে পানি বৃদ্ধি পায়। এই পানির অথৈ জলরাশি দেখে আপনার কাছে মনে হতেই পারে আপনি কোন সাগর বা মহাসাগরে ভ্রমণ করতে এসেছেন। এখানে কখনো যদি শীতের সময় বেড়াতে আসেন তাহলে অসংখ্য অতিথি পাখির দেখা পাবেন।
হাকালুকি হাওর কোন জেলায় অবস্থিত?
হাকালুকি হাওরটি সিলেট জেলার এবং মৌলভীবাজার জেলার ৫-৬টি উপজেলার অংশ নিয়ে বিস্তৃত। উপজেলা গুলোর নাম সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ, বিরানি বাজার, গোপালগঞ্জ এবং মৌলভীবাজারের বড় লেখা, কুলাউড়া, জুড়ি উপজেলা। হাওরটির আয়তন প্রায় ১৮১৫৫ হেক্টর বা ১৮১.১৫ বর্গ কিলোমিটার।
হাকালুকি হাওয়াটি সিলেট জেলার বিশ শতাংশ এবং মৌলভীবাজার জেলার আশি শতাংশ এলাকা নিয়ে বিস্তৃত। এটি ২৪০ টি বিলের সমন্বয়ে গঠিত এশিয়া মহাদেশের সু-মিষ্ট বা মিঠা পানির সবচেয়ে বড় হাওর হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে।
হাকালুকি হাওর ভ্রমণের সময়ঃ
শীত ও বর্ষা এই হাওরে ভ্রমণের সবচেয়ে মুক্ষম সময়। বর্ষার সময় এই হারটি পানিতে পরিপূর্ণ থাকার কারণে এর প্রাকৃতিক পরিবেশের অসাধারণ পরিবর্তন ঘটে। এছাড়াও অক্টোবর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত এই হাউর টিতে আপনি ভ্রমণ করতে পারেন। শীতের সময় দেশি-বিদেশি মিলিয়ে ২০০ প্রজাতির অতিথি পাখির দেখা মেলে।
হাকালুকি হাওর যাবেন কীভাবে?
ঢাকা থেকে সিলেটঃ
আপনি ঢাকা থেকে সিলেট উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা যেকোন একটি পরিবহনে টিকিট করে যাত্রা শুরু করে দিন। তারপর সিলেট পৌছানোর পর বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার, অটোরিক্সায় ফেঞ্চুগঞ্জ এর উদেশ্য রওনা শুরু করে দিন, রওনার পুর্বে একটি কথা বলে রাখা ভালো প্রতিটি গাড়ির ভাড়া (৪০-১০০) ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে।
ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলাটি থেকে বাসে এবং অটোরিক্সায় হাকালুকি আসতে প্রায় এক ঘন্টার মতো সময় লাগে। আপনি চাইলে মাইক্রোবাস বা প্রাইভেট কার রিজাভের মাধ্যমে নিয়ে যেতে পারেন এক্ষেত্রে আপনার খরচ হতে পারে ২০০০-৫০০০ (সময়ের উপর) বা তার বেশি।
ঢাকা থেকে আপনি ট্রেনের মাধ্যমেও সিলেটর মাইজগাও হয়ে হাকালুকির হাওর যেতে পারবেন। ঢাকা থেকে এই হাওরে যেতে হলে প্রথমে আপনাকে ঢাকার যে কোন একটি রেলস্টেশন (বিমান বন্দর বা কমলাপুর) হতে রাতে চলাচলকারী উপবন এক্সপ্রেস উঠতে হবে তারপর সিলেটে পৌছানোর আগের মাইজগাও ট্রেন স্টপে নেমে পড়তে হবে।
মাইজগাও থেকে পায়ে হেটে বা যেকোনো অটোরিকসার মাধ্যমে ফেঞ্চুগঞ্জ বাজার চলে আসতে হবে।ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা সদরের পাশে অবস্থিত কুশিয়ারা নদী ঘাটে চলে আসতে হবে। এখানে এসে দামদরের মাধ্যমে নৌকা ভাড়া করবেন তারপর নৌকা করে হাকালুকির হাওরটি ভ্রমণ করবেন।
ঢাকা থেকে মৌলভীবাজারঃ
মৌলভীবাজার জেলায় অবস্থিত কুলাউড়া উপজেলা এখান থেকেও হাকালুকির হাওর ভ্রমণ করা যায়।আপনি ঢাকার গাবতলী, আবদুল্লাপুর, মহাখালি, ফকিরাপুল, সায়েদাবাদ বাস স্টপ থেকে মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলা উদ্দেশ্য ছেড়ে আসা যেকোনো পরিবহনে (এস আলম, শ্যামলী ও এনা পরিবহন, সৌদিয়, গ্রীন লাইন) উঠতে হবে। এগুলোর ভাড়া (৭০০-১০০০) গাড়ি ভেদে আলাদা আলাদা হতে পারে।
হাওরে থাকাবেন কোথায়?
সিলেট সদর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে হাওড়াটি অবস্থিত হওয়ায় আপনি চাইলে সরাসরি সিলেট শহরে এসেও থাকতে পারেন। আর যদি মনে করেন হাওরের ভিতরে কোন একই স্থানে তাবু স্থাপন করে থাকবেন তাহলে সম্পূর্ণ নিরাপত্তার দায়িত্বটা নিয়ে নিবেন । এছাড়াও হাওরের পাশাপাশি অবস্থিত উপজেলা গুলোতে মোটামুটি মানের হোটেল রয়েছে সেখানে গিয়েও থাকতে পারবেন ।
হাওরে খাওয়া দাওয়াঃ
হাওরে গোছানোর পূর্বেই উপজেলা শহরগুলো থেকে দুপুরে খাওয়া দাওয়া করার জন্য কিছু খাবার কিনে নিবেন। আর যদি হাওড়ে আপনার কোন পরিচিত লোক থাকে তাহলে তাদের বাজার সদয় করার জন্য টাকা দিয়ে দিবেন তারা খাবারের ব্যবস্থা করে দিবে। আপনি চাইলে শুকনো খাবারও হাওড়ে নিয়ে যেতে পারেন যেটা আপনাকে খাবারের ব্যবস্থা করার চিন্তা থেকে মুক্ত করবে।
- সাজেক ভ্যালি কোথায় অবস্থিত? (দর্শনীয় স্থান ও ইতিহাস)
- জাফলং কিসের জন্য বিখ্যাত? (ভ্রমণের সকল তথ্য)
চাকিরর খবর ও নোটিশ পেতে আমাদের ফেইজবুক পেজটি ফলো করুন ও ইউটিউব চ্যানেলটি সাবক্রাইব করুন । অন্যান্য সব তথ্য পেতে আমাদের ওয়েব সাইটের সাথে থাকুন ।