ভ্রমণ গাইড

সাজেক ভ্যালি কোথায় অবস্থিত? (দর্শনীয় স্থান ও ইতিহাস)

ভ্রমণ পিপাসু মানুষের জন্য সাজেক ভ্যালি হল বাংলাদেশের ভিতরে অন্যতম একটি । সাজেক ভ্যালি হলো এমন একটি জায়গা যার প্রাকৃতিক পরিবেশ দেখে আপনি নিজেও মুগ্ধ হবেন। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানে প্রতিবছর প্রায় লক্ষ লক্ষ ভ্রমণ পিপাসু মানুষ ভ্রমণ করতে আসে । বছরের প্রায় প্রতিটা সময় লক্ষ্য করা যায় সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ প্রেমী মানুষের পদচারনায় মুখরিত থাকে। তাই আজকে আমরা সাজেক ভ্যালি সম্পর্কিত সকল তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করুন।

সাজেক ভ্যালি কোথায় অবস্থিত?

সাজেক ভ্যালি বাংলাদেশের রাঙ্গামাটি জেলার বাগাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নে অবস্থিত। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইউনিয়নটি হলো এই সাজেক:। সাজেকের পশ্চিম দিকে বাংলাদেশের খাগড়াছড়ি জেলা এবং পূর্ব দিকে ভারতের মিজোরাম অবস্থিত। সাজেকের আয়তন ৭০২ বর্গমাইল। এটি ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৮০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত। খাগড়াছড়ি হতে সাজেকের দূরত্ব সত্তর কিলোমিটার এবং দীঘিনালা হতে চল্লিশ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।এছাড়াও বাঘারহাট থেকে সাজেকক চৌত্রিশ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

কিভাবে যাবেন সাজেক ভ্যালিতেঃ

সাজেকের অবস্থান রাঙ্গামাটি জেলায় হওয়ার পরও খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা হতে যাওয়া আসা করা অনেকাংশে খুবই সহজ। আপনি যদি সরাসরি ঢাকা থেকে সাজেক ভ্রমণ করতে চান তাহলে ঢাকার যেকোনো বাস কাউন্টার থেকে খাগড়াছড়ি যাওয়ার বাস গুলোতে টিকিট করে উঠে পড়ুন। বেশিরভাগ বাসগুলোই রাত্রি দশটার থেকে এগারোটার ভিতরে ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। এসব বাসগুলোর ভাড়া ৭00 থেকে প্রায় ২০০০ টাকার ভিতরে হয়ে থাকে।

খাগড়াছড়ি শহরে নামার পরে ফ্রেশ হয়ে নিন তারপর এই শহরের শাপলা চত্বরের উদ্দেশ্যে রওনা দিন ।এখান থেকে ছোট ছোট জিপ গাড়ি গুলোর ভিতরে যে কোন একটিকে রিজার্ভ হিসাবে ভেজা ভাড়া করে নিন তারপর সাজেকের উদ্দেশ্যে রওনা দিন। এই ছোট জিপ গাড়ি গুলোতে একসাথে ১০ থেকে ১২ জন যাওয়া যায় ।

রাঙামাটি থেকে সাজেক যাব কিভাবে?

রাঙ্গামাটি থেকে সড়ক ও নৌপথে দুই ভাবে সাজেক ভ্রমণ করা যায়। রিজার্ভঘাট ও বাঘাইছড়ি ভিতরে প্রতিদিন লঞ্চ চলাফেরা করে। এই লঞ্চগুলো সকাল সাতটা থেকে দশটার ভিতরে একই স্থান থেকে অন্য স্থানে চলাফেরা করে। রিজার্ভ ঘাট থেকে বাঘাইছড়ি পর্যন্ত যেতে আজ থেকে ছয় ঘন্টার মত সময় লাগে। এছাড়াও রিজার্ভ থেকে মোটরসাইকেল ও বাসে সাজেক ভ্রমণ করতে পারবেন।

সাজেক ভ্যালীতে খাওয়ার ব্যবস্থাঃ

প্রত্যেকটি পর্যটন এলাকায় খাওয়া দাওয়া করার জন্য ভালো মানের হোটেল ও রেস্তোরাঁ থাকে। এক্ষেত্রে সাজেক ভ্যালি তার কোন অংশে কম নয়। সাজেক ভ্যালিতে আপনি উন্নত মানের খাবার হোটেল বা রেস্তোরা রয়েছে ।

১. মনটার রেস্টুরেন্ট
২. কাশবন রেস্টুরেন্ট
৩. ফুডানকি রেস্টুরেন্ট
৪. মারুতি দিদির রেস্টুরেন্ট
৫. চিম্বাল রেস্টুরেন্ট

এসব হোটেল বা রেস্টুরেন্টগুলোতে আপনারা চাইলে বারকিউ করে খেতে পারেন যেটাতে খরচ পড়বে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। এখানে খাবারের প্যাকেজ পাওয়া যায় যে প্যাকেজ গুলোতে ডাল, ভাত, মাছ, মাংস , সবজি ও ভর্তা সহ অন্যান্য খাবারও রয়েছে। এসব খাবারের গুণগত মান খুবই ভালো।

থাকাবো কোথায়ঃ

প্রতিটি পর্যটন এলাকায় আবাসিক হোটেল বা রিসোর্ট থাকে যেখানে ভ্রমণ প্রেমী মানুষগুলো রাত্রি যাপন করতে পারে। এক্ষেত্রে বেসরকারি পর্যায়ে সাজেকেও গড়ে উঠেছে উন্নত মানের হোটেল ও রিসোর্ট। নিচে কিছু রিসোর্ট বা হোটেলের নাম দেয়া হলোঃ

১. আদিবাসী ঘর
২. মেঘপুঞ্জি রিসোর্ট
৩. জুম ঘর ইকো রিসোর্ট
৪. মেঘ মাচাং রিসোর্ট
৫. লুসাই কটেজ
৬. ছায়া নিড় ইকো রিসোর্ট
৭. ইমানুয়েল রিসোর্ট
৮. আলো রিসোর্ট
৯. সারা রিসোর্ট
১০. রুন্ময় রিসোর্ট
১১. রইল পাড়া ক্লাব হাউস রিসোর্ট
১২. সাজেক রিসোর্ট

সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ করবেন কখন?

আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি শীতের শুরুর দিকে হঠাৎ আগস্ট থেকে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত সাজেক ভ্রমণ করা উত্তম। কারণ এই সময় মেঘ মালার সৌন্দর্য ভালোভাবে খুব কাছ থেকে উপলব্ধি করা যায়। আপনি চাইলে যেকোনো সময় সাজেক্ট ভ্রমন করতে পারেন কারণ সাজেক তার প্রাকৃতিক পরিবেশকে বিভিন্ন সময়ে নানান রুপে ফুটিয়ে তোলে পর্যটকদের কাছে।

সাজেক ভ্যালির দর্শনীয় স্থানঃ

সাজেক ভ্যালির প্রাকৃতিক পরিবেশটা বছরের সব সময় পরিবর্তন হয়। ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন রূপ ধারণ করে। এখানকার চারপাশের পরিবেশ সবুজ আর সবুজ। দেখে মনে হবে সবুজের সমারহে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছি।

সাজেকে রয়েছে কংলাক পাহাড় যেখান থেকে আপনি রাঙ্গামাটি শহরটি দেখতে পাবেন। এই পাহাড়টি সাজেকের সর্বোচ্চ পাহাড়। এই কংলাক পাহাড় থেকেই আপনি ভারতের লুসাই পাহাড় টি দেখতে পাবেন। আপনি যদি কম লাখ পাহাড় টি ভ্রমণ না করেন তাহলে সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ করা আপনার জন্য বৃথা হয়ে যাবে। ছাড়াও সাজেকে রয়েছে রুইলুই পাহাড় যেখান থেকে সাজেকের শুরু হয়েছে।

রুইলুই পাহাড়ে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের খাবার হোটেল ও রিসোর্ট গুলো। কংলাক ও রুইলুই পাহাড় ছাড়াও দেখার মতো এখানে আরো অনেক কিছু আছে যা আপনার চোখ দুটোকে জুড়িয়ে দিতে পারে। এছাড়াও সাজেকের উপজাতিদের ভিতরে বছরের কিছু কিছু সময়ে বিভিন্ন ধরনের উৎসব হয়। আপনি চাইলে এগুলোতে অংশগ্রহণ করতে পারেন।

 

চাকিরর খবর ও নোটিশ পেতে আমাদের ফেইজবুক পেজটি ফলো করুন ও ইউটিউব চ্যানেলটি সাবক্রাইব করুন । অন্যান্য সব তথ্য পেতে আমাদের ওয়েব সাইটের সাথে থাকুন ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button