টাঙ্গুয়ার হাওর কিসের জন্য বিখ্যাত? (ভ্রমণের সকল তথ্য ও ভ্রমণ গাইড)
বিশাল আকাশের নীল নীলিমার মতো, অত্যান্ত নির্মল, আয়নার মতো স্বচ্ছ স্নিগ্ধ রঙে রাঙা টইটুম্বর জলের ঢেউ প্রকৃতির দান টাঙ্গুয়ার হাওর।
টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমনঃ
পর্যটকদের আনাগোনায় মুখরিত প্রকৃতির উদার হস্থে সৃষ্ট অসাধারণ সৌন্দর্যমন্ডিত টাঙ্গুয়ার হাওর। টাঙ্গুয়ার হাওর সুনামগনঞ্জের তাহিরপুর ও ধর্মপাশা উপজেলার মেঘালয় পাহাড়েরর পাদদেশে অবস্থিত। কথিত আছে নয়কুড়ি কান্দার ছয়কুড়ি বিল, টাঙ্গুয়ার হাওর। প্রায় ১০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুরে বিস্তৃত বাংলাদেশের বৃহত্তম ২য় মিঠাপানির জলাভূমি টাঙ্গুয়ার হাওর।
ভারতের মেঘালয় পাহাড় থেকে প্রায় ৩০টিরও বেশি ঝার্ণ এসে মিসেছে এই হাওরে। ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারী এই বৃহত্তম জলাভূমিকে ২য় রামসার স্থান বলে ঘোষনা করা হয়েছে। এবং ২০০৩ সালের ০৯ নভেম্বর টাঙ্গুয়ার হাওর এর নিয়ন্ত্রনভার দেওয়া হয় জেলা প্রশাসকের হাতে। বিস্তৃত টাঙ্গুয়ার হাওরটি ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে বেশ সুপরিচিত।
টাঙ্গুয়ার হাওর এর অবস্থানঃ
সিলেট বিভাগস্থিত সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা ও তাহিরপুর উপজেলায় মেঘালয় পাহারের পাদদেশে প্রকৃতির সৌন্দর্যমন্ডিত টাঙ্গুয়ার হাওর অবস্থিত।
টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণের উপযুক্ত সময়ঃ
বর্ষাকালে মেঘালয়ের ৩০ টিরও বেশি ঝর্ণাসমূহ থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হাওরের চার পাশ উত্তাল জলের ঢেউয়ে ভরে উঠে। সাধারনত জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণের উপযুক্ত সময় বলে বিবেচনা করা হয়।
এছাড়া শীতকালে এই হাওরে অনেক অতিথি পাখির আগমন ঘটে। সু-দূর সাইবেরীয়া থেকে আগত পাখিদের কিছির মিছির আওয়াজ শুনে পাখিপ্রেমীদের মন ভরে ওঠে। শীতকাল টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণের উপযুক্ত সময় । তবে যে সময়েই যা না কেন, টাঙ্গুয়ার হাওর তার রূপ, মাধুর্য এবং বৈচিত্র্য দিয়ে আপনাকে মুগ্ধ করবে।
ঢাকা থেকে টাঙ্গুয়ার হাওরে কিভাবে যাবেনঃ
ঢাকা থেকে টাঙ্গুয়ার হাওরে যাওয়ার দুটি পথ রয়েছে।
প্রথমটি হলোঃ সুনামগঞ্জ>তাহেরপুর হয়ে টাঙ্গুয়ার হাওর
দ্বীতিয়টি হলোঃ নেত্রকোণা->মোহনগঞ্জ->ধর্মপাশা->মধ্যনগর হয়ে টাঙ্গুয়ার হাওর
সুনামগঞ্জ হয়ে টাঙ্গুয়ার হাওরঃ
ঢাকা থেকে সড়ক যোগে ফকিরাপুল, সায়েদাবাদ ও মহাখালী থেকে প্রতিদিন মামুন, শ্যামলী, হানিফ এন্টার প্রাইজ এবং এনা পরিবহনসহ এসি ও নন এসিসহ বেশ কিছু বাস প্রতিনিয়ত সুনামগঞ্জে আসা যাওয়া করে।
সুনামগঞ্জের আব্দুর জহুর সেতু থেকে চাইলে সুনামগঞ্জ সাহেব বাড়ির ঘাট থেকে হাউসবোটে করে সরাসরি টাঙ্গুয়ার হাওরে যেতে পারেন। আবার বাস, সিএনজি, কার, মটর সাইকেলসহ যেকোন যানবাহনে করে তাহিরপুর উপজেলায় গিয়ে সেখান থেকেও হাউসবোটে টাঙ্গুয়ায় যাওয়ার সু-ব্যবস্থা রয়েছে। হেমন্তকালে সিএনজি, কার, ও মটর সাইকেল নিয়ে যেতে হবে।
নেত্রকোণা হয়ে টাঙ্গুয়ার হাওরঃ
ঢাকা থেকে উপরোক্ত বাসে করে নেত্রকোণা। এরপর সিএনজি বা বাইকে করে মধ্যনগর বাজার। অথবা নেত্রকোণা থেকে বাসে করে সরাসরি মোহনগঞ্জ/ মধ্যনগর বাজার যাওয়ার সু-ব্যবস্থা রয়েছে। মধ্যনগর থেকে ট্রলারে করে টাঙ্গুয়ার হাওর যেতে পারবেন।
- তাহিরপুর উপজেলা কিসের জন্য বিখ্যাত? (ইতিহাস ও দর্শনীয় স্থান)
কোথায় থাকবেনঃ
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় টাঙ্গুয়ার হাওরে থাকার কোন ব্যবস্থা নাই বলেলই চলে। তবে টাঙ্গুয়া থেকে আনুমানিক ৩ কিঃমিঃ দূরে উত্তর-পূর্ব দিক রয়েছে ট্যাকেরঘাট চুনাপাথর খনি মাধ্যমিক প্রকল্পের
রেস্ট হাউজ। এছাড়াও টেকেরঘাটে হাওর বিলাশ নামে কাঠের তৈরি বাড়ি রয়েছে। সেখানে কম খরচে থাকতে পারবেন।
তাছাড়া তাহিরপুর বাজার ও, সুনামগঞ্জে থাকার মত অসংখ্য বোর্ডিং ও হোটেল রয়েছে। তবে রাতে ট্রলারে/হাউজ বোটে করে গেলে হাউজ বোটে থাকলে অন্যরকম এক অনুভূতি অনুভব করবেন। টাঙ্গুয়ার হাওর গেলে সাধারনত ট্রলারে/হাউজ বোটে বেশিরভাগ পর্যটক বৃন্দ রাত্রিযাপন করে থাকেন ।
খাবার ব্যবস্থাঃ
দিনে দিনে টাঙ্গুয়ার হাওর ঘুরে তাহিরপুর/ট্যাকেরঘাটে খাবার হোটেলে গিয়ে খেতে পারবেন। হাওরের বিভিন্ন প্রজাতির মাছ, দেশী হাঁস/মুরগি দিয়ে অনায়াসে ইচ্চেমত আহার পর্ব সেরে নিতে পারবেন। তবে ট্রলার/হাউজবোটে করে গেলে মূলত সেখানেই থাকা, খাওয়া ও গোসলসহ যাবতীয় কার্য্য সম্পন্ন করতে পাবেন।
রাতে ট্রলারে/হাউজ বোটে থাকলে যে কয়দিন থাকবেন সে হিসেবে প্রয়োজন অনুপাতে প্রয়োজনীয় সদাই করে নিবেন। লোক সংখ্যা বেশি হলে বাবুর্চি নিয়ে যেতে পারেন, কম হলে মাঝি ভাই নিজে থেকে রান্না করে খাওয়াতে পারবে।
চাকরির খবর ও নোটিশ পেতে আমাদের ফেইজবুক পেজটি ফলো করুন ও ইউটিউব চ্যানেলটি সাবক্রাইব করুন । অন্যান্য সব তথ্য পেতে আমাদের ওয়েব সাইটের সাথে থাকুন ।