সেন্টমার্টিন দ্বীপ কেন বিখ্যাত? (ইতিহাস ও দর্শনীয় স্থান)
বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপটির নাম হলো সেন্টমার্টিন দ্বীপ। এই দ্বীপটির অবস্থান বাংলাদেশের বঙ্গোপসাগরের উত্তর-পূর্বাংশ দিকে। সেন্টমার্টিন দ্বীপটি তার অপরুপ সৌন্দর্যের জন্য ভ্রমণ পিপাসু মানুষ আকর্ষন করে। প্রতিবছর প্রায় হাজার হাজার মানুষ তাদের প্রিয়জনদের সাথে নিয়ে এখানে ঘুরতে আসে। এই প্রবাল দ্বীপটি বিস্তারিত নিচে আলোচনা করা যাক।
প্রবাল দ্বীপটির অবস্থানঃ
কক্সবাজার মেইন শহর থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপটির দূরত্ব প্রায় ১২০ কিলোমিটার। টেকনাফ হতে প্রায় ৯ মি. মিটার দক্ষিণে এই প্রবাল দ্বীপটি অবস্থিত। যার অবস্থান নাফ নদীর মোহনায়।
সেন্টমার্টিন দ্বীপের নামকরণঃ
বাংলাদেশের এই প্রবাল দ্বীপটির পূর্ব নাম ছিলো জিঞ্জিরা। অতীতে আরব বনিকরা বাণিজ্য আসতো এবং বাণিজ্যের জন্য যাতায়াত করার সময় এখানে তারা বিশ্রাম নিতো। এই বণিকরাই এই সর্বপ্রথম নাম দেন জিঞ্জিরা। তৎকালীন সময়ের চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষের কাছে এই দ্বীপটি জিঞ্জিরা নামেই পরিচত ছিল। ১৯০০ সালে বৃটিশ ভূজরিপ দল এই দীপে ভূ-জরিপ করতে আসেন তার একজন খ্রিষ্টান ব্যক্তির নাম অনুসারে এই জিঞ্জিরা দ্বীপটির নামকরণ করেন সেন্টমার্টিন দ্বীপ। সেই সময় থেকে মানুষ এই সেন্টমার্টিন দ্বীপ জানে।
কিভাবে যাবেন সেন্টমার্টিন দ্বীপেঃ
আপনি ঢাকা থেকে যদি সেন্টমার্টিন যেতে চান তাহলে প্রথমে আব্দুল্লাপুর, গাবতলী, কলাবাগান, কল্যানপুর, সায়েদাবাদ, ফকিরাপুল আপনি যে এলাকার বাসিন্দা হোন না কেনো, যেকোনো একটি টেকনাফ গামী পরিবহন কাউন্টার থেকে যেকোনো একটি পরিবহনে (সেন্টমার্চিন পরিবহন, সেন্টমার্টিন হুন্দাই, এস আলম, গ্রীন লাইন, মর্ডন লাইন, রয়েল কোচ, হুন্দাই, শ্যামলী) টিকেট করে যাত্রা শুরু করে দেন। টেকনাফ পৌছানোর পর, সেখান থেকে জাহাজে অথবা ট্রলারে এর যাত্রা শুরু করে দেন। দ্বীপটিতে টেকনাফ থেকে ট্রলার বা লঞ্চে আপনার সময় লাগবে প্রায় ৪-৫ ঘন্টার মতো।
সেন্টমার্টিনে ভ্রমণ করার সময়ঃ
সাধারণত অক্টোবরের শেষের দিকে এবং নভেম্বর মাসের শুরু হতে মার্চ মাস পর্যন্ত সময়কে সেন্টমার্টিন যাওয়ার মূখ্য সময় হিসেবে ধরা হয়। বাকি অন্য মাস গুলোতে সাগর অনেক সময় উত্তাল থাকে। বাকি সময়গুলোতে সাগর নিরাপদ না থাকায় ভ্রমণ না করাই শ্রেয়। তাছাড়া শীতের সময় করাই সবচেয়ে বেশি ভালো।
সেন্টমার্টিন দ্বীপের গুরুত্বপূর্ণ রিসোর্ট বা হোটেল সমুহঃ
এই দ্বীপটিতে রাত্রিযাপন করার জন্য বিভিন্ন রকমের হোটেল ও রিসোর্ট। এই হোটেল বা রিসোর্ট গুলোর প্রতিটির ভাড়া বেড ও ঘর অনুপাতে ভিনরকম। প্রতিটি হোটেলের ভাড়ার ভিতরে কিছুটা তারতম্য রয়েছে । নিচে কিছু হোটেল বা রিসোর্ট এর নাম উল্লেখ করা হলোঃ
১. ড্রিম নাইট রিসোর্ট
২. ব্লু মেরিন রিসোর্ট
৩. নীল দিগন্তে রিসোর্ট
৪. লাবিবা বিলাস রিসোর্ট
৫. সায়রী ইকো রিসোর্ট
৬. প্রিন্স হেভেন রিসোর্ট
৭. প্রাসাদ প্যারাডাইস রিসোর্ট
৮. সানসেট ভিউ রিসোর্ট
৯. মারমেইড রিসোর্ট
১০. শ্রাবণ বিলাস রিসোর্ট
সেন্টমার্টিন দ্বীপের বিখ্যাত খাবারঃ
ডাবঃ ডাব হলো এই দ্বীপের বিখ্যাত খাবার গুলো ভিতরে অন্যতম। এখান কার ডাব এতটাই সু-স্বাদু আপনি খেলে জানতে পারবেন না। আপনি যদি এখান ভ্রমণ করতে আসেন আশা করি ডাব খেতে কখনও ভূলবেন না।
ডাব ছাড়াও এখানে বাহারি রকমের খাবার রয়েছে যা খুবই সুস্বাদু এবং টেস্টি একবার খেলে মনে হবে বারবার খাই। সুস্বাদু খাবার গুলোর ভিতরে রয়েছে ইলিশ, কালাচাঁদ, রবস্টার, কোরাল, সুন্দরী পোয়া মাছের বাহারি স্বাদের খাবার। আপনি আরো একটি খাবার খেতে পারেন সেটা হলো মুরগীর কোরা। এছাড়াও এই দ্বীপটিতে আরোও ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের খাবার রয়েছে যা খেতে দেখতে পারেন।
সেন্টমার্টিন দ্বীপ কেন বিখ্যাত?
বাংলাদেশের বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপটি অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা এই দ্বীপটি কেন বিখ্যাত সামান্য কথায় বলা খুবই মুশকিল।এখানে সারি সারি নারকেল গাছগুলো এই দ্বীপের সৌন্দর্যকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। আর সমুদ্রের ঢেউ এবং হালকা হালকা বাতাস দ্বীপের পরিবেশটাকে করে তুলেছে।
সেন্টমার্টিন দ্বীপটির দর্শনীয় স্থানঃ
১. ছেড়া দ্বীপ
২. সারি সারি নারকেল গাছ
৩. কোরাল দ্বীপ
৪. রাস্তার পাশে থাকা সুন্দর সুন্দর রিসোর্ট সমুহ
আমরা চেষ্টা করেছি এই দ্বীপটি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার যতটুকু পেরেছি সকল তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। উপরে আলোচিত তথ্যের ভিতরে যদি কোন ভূলত্রুটি থাকে তাহলে কমেন্ট করে আমাদেরকে জানাতে পারে। তাহলে আমরা সেটা সংসোধন করবো ইনশাল্লাহ।
চাকিরর খবর ও নোটিশ পেতে আমাদের ফেইজবুক পেজটি ফলো করুন ও ইউটিউব চ্যানেলটি সাবক্রাইব করুন । অন্যান্য সব তথ্য পেতে আমাদের ওয়েব সাইটের সাথে থাকুন ।