অন্যান্য

বাংলা ১ম পত্র | বই পড়া প্রবন্ধ থেকে সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর | ৬-১০

বই পড়া গল্পটি হতে সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর সমুহ

প্রমথ চৌধুরীর বই পড়া প্রবন্ধটি থেকে এসএসসি পরিক্ষায় কমন উপযোগী কিছু গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আজকের মূখ্য আলোচনা পর্ব । অতএব প্রশ্ন ও উত্তর গুলো মনোযোগ সহকারে পড়ুন ।

প্রমথ চৌধুরীর বই পড়া গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তরঃ

প্রশ্ন ০৬ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে লব্ধ জ্ঞান পূর্ণাঙ্গ নয় বলে ব্যাপকভাবে বই পড়া দরকার। কারণ সুশিক্ষিত লোকমাত্রই স্বশিক্ষিত। যথার্থ শিক্ষিত হতে হলে মনের প্রসার দরকার। তার জন্য বই পড়ার অভ্যাস বাড়াতে হবে। এজন্য লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন ।

ক. ‘বইপড়া’ প্রবন্ধটির লেখক কে? )
খ. ডেমোক্রেসি সাহিত্যের সার্থকতা বোঝে না কেন? বাকাশিবো- ২০১৫
গ. “এজন্য লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন।”— উক্তিটি ‘বইপড়া’ প্রবন্ধের আলোকে ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “সুশিক্ষিত লোকমাত্রই স্বশিক্ষিত।”-উদ্দীপক ও পঠিত প্রবন্ধের বক্তব্য এই কথাটিই ধারণ করে।-বিশ্লেষণ করো।

৬ নং প্রশ্নের উত্তর ক

‘বইপড়া’ প্রবন্ধের লেখক প্রমথ চৌধুরী।

৬ নং প্রশ্নের উত্তর খ

শিক্ষার ফল হাতে হাতে পাওয়া যায় না। অর্থাৎ তার কেনো নগদ বাজারদর নেই বলেই ডেমোক্রেসি সাহিত্যের সার্থকতা বোঝে না । আমাদের সমাজে দু’টি শ্রেণির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দুটি বিষয়ে মতপার্থক্য লক্ষ করা যায়। ধনীরা বলে ধনই সবকিছু, কিন্তু জ্ঞানীরা বলে জ্ঞানই পৃথিবীর সবকিছু।

তাই প্রমথ চৌধুরী জ্ঞান ও ধন দু’টি বস্তু দিয়ে জ্ঞানী ও নির্বোধের তুলনা করেছেন। ডেমোক্রেসি তথা সিভিল সমাজ-ধনকে নগদ পাওনা বলে সেটিকে মূল্যবান মনে করে। তাদের কাছে সাহিত্যের বাজার দর কদরহীন।

৬ নং প্রশ্নের উত্তর 

‘জ্ঞানার্জনের জন্য লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন’ উক্তিটি ‘বইপড়া’ প্রবন্ধ অনুসারে যুক্তিপূর্ণ। বই পড়া অর্থাৎ সাহিত্য চর্চার জন্য লাইব্রেরি অপরিহার্য। বাস্তবতার দিকে তাকালে দেখা যায় যে, বিভিন্ন ধরনের চর্চা ভিন্ন ভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত হয়। যেমন : ধর্মের চর্চা মন্দির কিংবা মসজিদে; দর্শনের চর্চা গুহায়।

নীতির চর্চা ঘরে এবং বিজ্ঞানের চর্চা জাদুঘরে। ঠিক তেমনি সাহিত্য চর্চার জন্য লাইব্রেরির কোনো বিকল্প নেই । উদ্দীপকে অতুলনীয় বৈশিষ্ট্যে লাইব্রেরিকে তুলে ধরা হয়েছে। মহাসমুদ্রের শত বছরের কল্লোলের আবদ্ধ স্থানের সঙ্গে লাইব্রেরিকে তুলনা করা হয়েছে।

সেখানে বলা হয়েছে, হাজারো বছরের মানুষের অর্জিত জ্ঞান লাইব্রেরিতে সুপ্ত অবস্থায় রয়েছে। কালো কালির অক্ষরে মুদ্রিত লাইব্রেরির এ জ্ঞান মানুষের মনের সকল অন্ধকার দূর করে মানুষকে প্রকৃত জ্ঞানী করে তোলে। ‘বই পড়া প্রবন্ধে প্রমথ চৌধুরী বলেছেন, লাইব্রেরিতে মানুষ স্বেচ্ছায় ও সানন্দচিত্তে জ্ঞানার্জন করে প্রকৃত জ্ঞানী হতে পারে।

লাইব্রেরিকে তিনি মনোরাজ্যের হাসপাতালের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলেছেন, যত বেশি লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠিত হবে তত বেশি দেশ উন্নতি হবে । আর এইসব দিক বিবেচনায় তাই বলা যায় যে, প্রশ্নোক্ত উক্তিটি যৌক্তিক ও সাফল্যমণ্ডিত হয়েছে।

৬ নং প্রশ্নের উত্তর 

“সুশিক্ষিত লোক মাত্রই স্বশিক্ষিত”- এ কথাটি উদ্দীপক ও ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের আলোকে যথার্থ স্বশিক্ষিত অর্থ হলো নিজের শিক্ষা। ব্যক্তি যখন নিজেই নিজেকে শিক্ষা দেয় বা নিজে থেকেই নিজে শিক্ষা গ্রহণ করে, তাকে বলা হয় স্বশিক্ষা।

তাই আদর্শ শিক্ষা ব্যবস্থার স্বরূপ হলো শিক্ষার্জনে শিক্ষার্থীদেরকে সক্ষম করে তোলা এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে তার জ্ঞানের প্রসার ঘটানো। উদ্দীপকে বলা হয়েছে, সুশিক্ষা অর্জিত হয় স্বশিক্ষার মাধ্যমে।

আমাদের প্রচলিত শিক্ষাযন্ত্রের মধ্যে শিক্ষার্থীর প্রাণশক্তি নিষ্পেষিত হলেও সৌভাগ্য যে, এর মধ্যে কিছু শিক্ষার্থী আছে যাদেরকে এহেন শিক্ষাপদ্ধতি একেবারে নিষ্পেষিত করতে পারে না।

প্রমথ চৌধুরীর মতে, স্বশিক্ষায় শিক্ষিত হতে হলে কোনোভাবেই প্রচলিত ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষা ব্যবস্থার উপর নির্ভর করলে চলবে না। শিক্ষা ব্যবস্থা যেমনই হোক না কেন, বিদ্যার সাধনা শিক্ষার্থীকে নিজেই অর্জন করতে হবে। গুরু বা শিক্ষক পথপ্রদর্শকের কাজ করবেন মাত্র ।

উদ্দীপক ও ‘বইপড়া’ প্রবন্ধের তুলনামূলক আলোচনা করে বলা যায়, যথার্থ শিক্ষিত হতে হলে মনের প্রসার দরকার। তার জন্য বই পড়ার অভ্যাস বাড়াতে হবে। ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে লেখক বলেছেন, যে জাতি মনে বড় নয় সে জাতি জ্ঞানেও বড় নয়।

কেননা ধনের সৃষ্টি যেমন জ্ঞানসাপেক্ষ তেমনি জ্ঞানের সৃষ্টিও মনসাপেক্ষ। জ্ঞানানুবর্তী মনের সবচেয়ে বড় নির্মাতা হলো তার পুস্তক পাঠাভ্যাস বা সাহিত্যচর্চা, তাই এ দিক বিবেচনায় প্রশ্নোক্ত কথাটি যথার্থ ও সার্থক বলেই প্রমাণিত হয়েছে।

বাংলা ১ম পত্রের বই পড়া গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন নং ৭ : বাল্যকাল হইতে আমাদের শিক্ষার সহিত আনন্দ নাই। কেবল যাহা নিতান্ত আবশ্যক, তাহাই কণ্ঠস্থ করিতেছি। তাহাতে কোনোমতে কাজ চলে মাত্র, কিন্তু মনের বিকাশ লাভ হয় না। হাওয়া খাইলে পেট ভরে না, আহার করিলে পেট ভরে, কিন্তু আহারাদি রীতিমত হজম করিবার জন্য হাওয়া আবশ্যক।

ক. ‘বই পড়া’ প্রবন্ধটি প্রমথ চৌধুরীর কোন গ্রন্থ থেকে সংকলন করা হয়েছে?
খ. ‘সুশিক্ষিত লোকমাত্রই স্বশিক্ষিত।’- কেন? বুঝিয়ে দাও।
গ. উদ্দীপকটি ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের সঙ্গে কোন দিক থেকে সাদৃশ্যপূর্ণ? আলোচনা করো।
ঘ. “উদ্দীপকটি ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের সমগ্র ভাব নয়, খণ্ডাংশকে ধারণ করেছে মাত্র।”-বিশ্লেষণ করো।

৭ নং প্রশ্নের উত্তর ক

‘বই পড়া’ প্রবন্ধটি প্রমথ চৌধুরীর ‘প্রবন্ধ সংগ্রহ’ থেকে সংকলন করা হয়েছে।

৭ নং প্রশ্নের উত্তর খ

শিক্ষা কেউ কাউকে দিতে পারে না- এজন্য প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করা হয়েছে।পৃথিবীতে বস্তুগত ও ভাবগত সকল বিষয়েরই আদান-প্রদান প্রথা প্রচলিত আছে। তবে শিক্ষা এমন একটি ব্যাপার যা কখনো বিনিময় করা সম্ভব নয়।

একজন শিক্ষক বড়জোর শিষ্যের আত্মাকে উদ্বোধিত করতে পারেন, কিন্তু শিক্ষিত করে তুলতে পারেন। না। এটা নিজস্ব চর্চা এবং অভ্যাসের মাধ্যমে আয়ত্ত করে নিতে হয়। এ কারণেই প্রাবন্ধিক প্রশ্নোক্ত উক্তিটির অবতারণা করেছেন

৭ নং প্রশ্নের উত্তর গ

শিক্ষাকে আনন্দের সঙ্গে গ্রহণ করতে হয়— ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের এই বিষয়টি উদ্দীপকের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।

মানুষের মানবসত্ত্বা বিকাশের জন্য বই পড়া অপরিহার্য। বই মানুষের মানবসত্ত্বা বিকাশে সহায়ক। বই পড়লে মানুষ শিক্ষিত হয়। এ জন্য শিক্ষাকে আনন্দের সঙ্গে গ্রহণ করতে হয়। আর এই শিক্ষা নিজের চেষ্টাতেই অর্জন করতে হয়।

উদ্দীপকে বলা হয়েছে, বাল্যকাল হতে আমাদের শিক্ষার সঙ্গে আনন্দের সংযোগ নেই। আমরা কেবল যেটুকু আমাদের নিতান্ত প্রয়োজন সেটুকুই কণ্ঠস্থ করি। এতে আমাদের কোনোমতে কাজ চলে যায় মাত্র। তাতে কোনোক্রমেই মনের বিকাশ সাধিত হয়। না।  পাঠ্যপুস্তকের সঙ্গে হজম করতে হয়।

‘বই পড়া’ প্রবন্ধেও, উৎসাহিত করেছেন। আমরা জাতি হিসেবে সৌখিন নই বলে শখ করে কেউ বই পড়ি না। ফলে আমরা শিক্ষার মধ্যে আনন্দ খুঁজে পাই না। আমাদের অভিভাবকগণ ছেলে-মেয়েদের স্কুল-কলেজে পাঠিয়ে নিশ্চিন্ত থাকেন।

তাদের ধারণা, বিদ্যাপীঠ থেকে ছেলে-মেয়েরা এমন পরিমাণ বিদ্যা অর্জন করবে যাতে ভাবীকালের সময়টা ভালোভাবেই কেটে যাবে। তাই পাঠ্যপুস্তকের সাথে আনন্দচিত্তে অন্য বিষয় সম্পর্কিত পুস্তকও পাঠ করা অত্যাবশ্যক। আর এখানেই উদ্দীপকের সঙ্গে আলোচ্য প্রবন্ধের সাদৃশ্য।

৭ নং প্রশ্নের উত্তর ঘ

প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। একটি সভ্য ও শিক্ষিত জাতির ভিত নির্ভর করে তার উন্নত শিক্ষাব্যবস্থার উপর। তাই আমাদের প্রকৃত শিক্ষা অর্জন করতে হবে। এই শিক্ষা অর্জিত হবে আনন্দের মাধ্যমে। শিক্ষার্থীদের বই গিলিয়ে নয়।

‘বই পড়া’ প্রবন্ধে লেখক প্রমথ চৌধুরী বলেছেন, জোর করে কাউকে শিক্ষিত করা যায় না। সুশিক্ষিত লোকমাত্রই স্বশিক্ষিত । পুস্তকের সঙ্গে অনেক পাঠ্য-বহির্ভূত শিক্ষা মানুষকে অর্জন করতে হয় আনন্দের সঙ্গে। স্বশিক্ষিত হওয়ার জন্য মানুষকে পুস্তকও পড়তে হয়। কিন্তু আমরা শিক্ষার ফলটা হাতে হাতে পেতে চাই।

আমরা ধারণা করি, বিদ্যাপীঠে পাঠিয়েই শিক্ষার্থীদের বিদ্যা অর্জন যারা হয়ে গেল। এই বিদ্যার জোরেই তারা বাকিটা জীবন আরাম-আয়েসে কাটিয়ে দিতে পারবে। উদ্দীপকেও বল হয়েছে, আমাদের শিক্ষার সঙ্গে আনন্দ নেই যদিও বাল্যকাল হতে আমরা শিক্ষা গ্রহণ করে থাকি। কেননা শিক্ষার ক্ষেত্রে আমরা যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকুই গ্রহণ করি।

এতে কোনোমতে কাজ চলে মাত্র কিন্তু ব্যক্তির মানসিক বিকাশ সাধিত হয় না। উদ্দীপকে আরো বলা হয়েছে, হাওয়া খেলে মানুষের পেট ভরে না কিন্তু খাবারকে হজম করার জন্য হাওয়ার প্রয়োজন।

‘বইপড়া’ প্রবন্ধে লেখক আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থার বর্তমান ও অতীতের শিক্ষাব্যবস্থার নানাত্রুটি-বিচ্যুতি, শিক্ষার প্রতি অনীহা, সাহিত্য পাঠে অরুচি, বই পড়ার গুরুত্বসহ নানা বিষয় তুলে ধরেছেন। কিন্তু উদ্দীপক শুধু শিক্ষার সহিত আনন্দ ও অন্য বই পাঠ করার বিষয়টি ফুটে উঠেছে। অন্যান্য দিকগুলো অনুপস্থিত রয়েছে। 

বাংলা ১ম পত্র | বই পড়া প্রবন্ধ থেকে সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর | ৬-১০
বই পড়া প্রবন্ধ থেকে সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

SSC পরিক্ষায় কমন উপযোগী প্রশ্ন ও উত্তরঃ

প্রশ্ন নং ৮: বই কেনার সামর্থ্য নেই। তবুও বিভিন্ন বন্ধুর নিকট থেকে বই সপ্তাহ করে পড়ে পায়েল। সাহিত্য, সাহিত্য সমালোচনা, আত্মজীবনী, দর্শন- জ্ঞানজগতের সকল প্রদেশে তার যাতায়াত থাকা চাই। অন্য দিকে তার বন্ধু কাকলি বই কিনে বন্ধুদের উপহার ে কিন্তু নিজে খুব একটা পড়ে না। তার ধারণা, এসব বই পড়ে কী হবে? প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাই যথেষ্ট।

ক. ‘বই পড়া’ প্রবন্ধ অনুসারে লেখকের মতে, গ্রামে গ্রামে কী প্রতিষ্ঠা করা উচিত?
খ. ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক লাইব্রেরিকে হাসপাতালের সঙ্গে তুলনা করেছেন কেন?
গ. উদ্দীপকে ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের কোন দিকটি প্রকাশিত হয়েছে?- আলোচনা করো।
ঘ “উদ্দীপকের পায়েল ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের একটি বিশেষ চিন্তার ধারক।”- মন্তব্যটি বিচার করো।

৮ নং প্রশ্নের উত্তর ক

‘বই পড়া’ প্রবন্ধ অনুসারে লেখকের মতে, গ্রামে গ্রামে লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করা উচিত। 

৮ নং প্রশ্নের উত্তর খ

বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় লাইব্রেরির গুরুত্ব বুঝাতে প্রাবন্ধিক লাইব্রেরিকে হাসপাতালের সাথে তুলনা করেছেন। লাইব্রেরি হচ্ছে এক ধরনের মনের হাসপাতাল। কারণ মানুষের মনের রোগ-শোক, কালিমা দূর করে মনকে সতেজ, সুস্থ ও সবল রাখার জন্য, আবার তুষ্টি সাধনের জন্য লাইব্রেরি মুখ্য ভূমিকা পালন করে।

৮ নং প্রশ্নের উত্তর গ

উদ্দীপকে ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের পাশ করা ও শিক্ষিত হওয়া এক কথা নয় এই দিকটি প্রকাশিত হয়েছে। লেখক প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বা পাশ করা বিদ্যাকে প্রকৃত শিক্ষা বলে মেনে নিতে নারাজ। কারণ এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর সুশিক্ষিত বা স্ব শিক্ষিত হবার সুযোগ নষ্ট হয়ে যায়। এজন্য পাঠ্যবই ছাড়াও অন্যসব বই বেশি বেশি পাঠ করা দরকার।

উদ্দীপকে লেখক কাকলির মানসিকতার জন্য আমাদের প্রচলিত ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষা ব্যবস্থাকেই দায়ী করেছেন। আলোচ্য প্রবন্ধে লেখক বলেছেন, আত্মমোচনের প্রধান উপায় সাহিত্য চর্চা বা বই পড়া। কিন্তু প্রচলিত শিক্ষা পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা নোট নামক গুরুদণ্ড নানা আকারে প্রকারে মুখস্ত করে পরীক্ষার হলে তা উদগিরণ করে পাস করে।

লেখকের মতে, এহেন শিক্ষাব্যবস্থা শুধু ব্যর্থই নয় মারাত্মকও বটে। এতে শিক্ষার্থীদের স্বশিক্ষিত হবার শক্তিটুকুও নষ্ট করে দেয়। যা উদ্দীপকে আমরা লক্ষ করি। উদ্দীপকে শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য ব্যতিরেকে শুধু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার গুরুত্বের কথা তুলে ধরা হয়েছে।

৮ নং প্রশ্নের উত্তর ঘ 

“উদ্দীপকের পায়েল ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের একটি বিশেষ চিন্তার ধারক”- মন্তব্যটি যথার্থ। মূলত সুশিক্ষা অর্জিত হয় স্বশিক্ষার মাধ্যমে। শিক্ষা ব্যবস্থা যেমনই হোক না কেন বিদ্যার সাধনা শিক্ষার্থীকে নিজেই অর্জন করতে হবে। গুরু বা শিক্ষক তার পথপ্রদর্শকের কাজ করবেন মাত্র।

আর এই বিষয়টিই উদ্দীপক ও আলোচ্য প্রবন্ধে ফুটে উঠেছে। উদ্দীপকে পায়েলের স্বেচ্ছায় বই পড়ার আগ্রহের ব্যাপারটি লেখক ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখেছেন। কিন্তু তারই বন্ধু কাকলির বই কেনার সামর্থ্য থাকলেও বই পড়ার আগ্রহ নেই।

অন্যদিকে পায়েলের বই কেনার সামর্থ্য না থাকলেও তার জানার, দেখার ও জ্ঞানভাণ্ডার পরিপূর্ণ করার অদম্য আগ্রহকে তার দারিদ্র্য স্পর্শ করতে পারে নি। এখানে পায়েলের নিজস্ব চিন্তা-চেতনা, ভাবধারা ও প্রবল জ্ঞানার্জনের স্পৃহা তাকে অবদমিত করতে পারে নি। তাইতো বন্ধুর কাছ থেকে ধার করে হলেও তার প্রাণের পিপাসা মেটায়।

উদ্দীপক ও ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের তুলনামূলক বিশ্লেষণে বলা যায়, যেখানে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শিক্ষার্থীদেরকে প্রাণশক্তিহীন করে দেখ সেখানে পায়েলকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নিষ্পেষিত করতে পারে নি।

কারণ সে বাইরের শুরুর পরিবর্তে নিজের ভেতরেই এক পরম আত্মগুরু তৈরি করেছে। ফলে বিদ্যার সাধনা দ্বারা পায়েল নিজেই জ্ঞান অর্জন করার চেষ্টা করে। সুতরাং উপর্যুক্ত মন্তব্যটি যথার্থ। 

বই পড়া প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর

প্রশ্ন নং ৯: মহাসমুদ্রের শত বৎসরের কল্লোল কেহ যদি এমন করিয়া বাঁধিয়া রাখিত তবে সে ঘুমাইয়া পড়া শিশুটির মতো চুপ করিয়া থাকিত, তবে সেই মহাশব্দের সহিত এই লাইব্রেরির তুলনা হইত। এখানে ভাষা চুপ করিয়া আছে, প্রবাহ স্থির হইয়া আছে, মানবাত্মার অমর আলোক কালো অক্ষরের শৃঙ্খলে কাগজের কারাগারে বাঁধা পড়িয়াছে।

ক. প্রমথ চৌধুরী সম্পাদিত সাময়িক পত্রের নাম কী?
খ. ‘এ আশা সম্ভবত দুরাশা।’ -কেন?
গ. উদ্দীপকে ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের যে দিকটি প্রকাশিত হয়েছে তা বর্ণনা করো।”
ঘ. উদ্দীপকের বিষয়বস্তু ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের সমগ্র ভাবকে ধারণ করে না। –মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।

৯ নং প্রশ্নের উত্তর

প্রমথ চৌধুরী সম্পাদিত সাময়িকপত্রের নাম ‘সবুজপত্র’।

৯ নং প্রশ্নের উত্তর খ

শিক্ষালাভের মাধ্যমে মানুষের পার্থিব চাহিদা পূরণ হয় না বলে আলোচ্য উক্তিটি করা হয়েছে। সাধারণ লোকদের প্রচলিত বিশ্বাস যে, শিক্ষালাভের মাধ্যমে মানুষের অন্নচিন্তা, বস্ত্রচিন্তা ও অর্থচিন্তা দূর হয়ে যায়। শিক্ষালাভে মানুষের পার্থিব চাহিদা মুহূর্তেই শেষ হয়ে যায় বলে মানুষের যে বিশ্বাস, আশাবাদ প্রাবন্ধিক সেটাকে অসম্ভৰ ে দুরাশা বলে অভিহিত করেছেন।

৯ নং প্রশ্নের উত্তর গ

উদ্দীপকে ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের লাইব্রেরির সমৃদ্ধি ও গুরুত্বের দিকটি প্রকাশিত হয়েছে। লাইব্রেরি হচ্ছে জ্ঞানের আধার। লাইব্রেরি প্রতিটি মানুষকে নিজ শক্তি ও রুচি অনুসারে নিজ চেষ্টায় মনকে জ্ঞানের পথে নিয়ে যায়। বর্তমানে উন্নত ও আলোকিত সভ্যতা গড়ে উঠার পেছনে লাইব্রেরির গুরুত্ব ব্যাপক।

উদ্দীপকে লাইব্রেরিকে মহাসমুদ্রের শত বছরের কল্লোলের আবদ্ধ স্থানের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। কারণ মহাসমুদ্রে যেন জলরাশির অভাব নেই, তেমনি লাইব্রেরিতে জ্ঞানের অভাব নেই। কালো অক্ষরের শৃঙ্খলে আবদ্ধ হয়ে আছে জ্ঞানের নানা উদ্দীপকের এই দিকটির মধ্যে ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের লাইব্রেরির গুরুত্বের দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে।

‘বই পড়া’ প্রবন্ধেও লেখা লাইব্রেরিকে হাসপাতালের সাথে তুলনা করেছেন। লাইব্রেরির মাধ্যমে বিভিন্ন বইয়ের সংস্পর্শে এসে মানুষের মন সজীব, সহে ও সজাগ হয়ে ওঠে। তাই আমাদের জীবনে লাইব্রেরির ভূমিকা অপরিসীম। তাই বলা যায়, উদ্দীপকে ‘বই পড়া এবং লাইব্রেরির উন্নতি ও গুরুত্বের বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছে।

৯ নং প্রশ্নের উত্তর ঘ

“উদ্দীপকের বিষয়বস্তু ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের সমগ্র ভাবকে ধারণ করে না”- মন্তব্যটি যথার্থ। ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের প্রাবন্ধিক বই পড়ার সাথে সাথে সাহিত্য ও শিক্ষার সম্পর্ক নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ অভিমত ব্যক্ত করেছেন। আমার সমাজের প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি, বই পড়ার প্রতি মানুষের অনীহার কারণ ও লাইব্রেরি সীমাহীন গুরুত্বের দিকটি তুলে ধরেছেন।

উদ্দীপকে লাইব্রেরির গুরুত্বের দিকটি তুলে ধরা হয়েছে। লাইব্রেরিকে মহাসমুদ্রের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। লাইব্রের মানবাত্মার ভাষা স্থির হয়ে আছে। স্তরীভূত হয়ে আছে বহু পুরাতন বছরের জ্ঞান। এ দিকটির সাথে ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে লাইব্রের গুরুত্বের দিকটিই কেবল উঠে এসেছে।

আলোচ্য প্রবন্ধে বই পড়ার গুরুত্ব, আমাদের সমাজে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার জটি সুশিক্ষিত হবার উপায় বর্ণিত হয়েছে। ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে লেখক অতীত ও বর্তমানের শিক্ষা ব্যবস্থা, শিক্ষা লাভের অন্তরায়, জটিলতা, সাহিত্যের প্রতি রুচি, বই পড়ার গুরুত্ব ইত্যাদি বিষয় যুক্তিনিষ্ঠভাবে তুলে ধরেছেন।

কিন্তু উদ্দীপকে শুধু লাইব্রেরির গুরুত্বকে বাণীরূপ দেয়া হয়েছে। বই প্রবন্ধের উদ্ভাসিত অন্যান্য বিষয় উদ্দীপকে সম্পূর্ণরূপে অনুপস্থিত বলে উপর্যুক্ত যথার্থ হয়েছে।

বই পড়া গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তরঃ

প্রশ্ন ১০ আমাদের এই রোগ-শোক, দুঃখ-দারিদ্র্যের দেশে সুন্দর জীবন ধারণ করাই যখন হয়েছে প্রধান সমস্যা, তখন ে জীবনকেই সুন্দর করা, মহৎ করার প্রস্তাব অনেকের কাছে নিরর্থক এবং নির্মমও ঠেকবে। আমরা সাহিত্যের রস উপভোগ করতে হ নই; কিন্তু শিক্ষার ফল লাভের জন্য আমরা সকলেই উদ্বাহু। আমাদের বিশ্বাস শিক্ষা আমাদের গায়ের জ্বালা ও চোখের জল দু-ই করবে। এ আশা সম্ভবত দুরাশা।

ক. প্রমথ চৌধুরীর সাহিত্যিক বা ছদ্ম নাম কী?
খ. আত্মার অপমৃত্যু হয় কীভাবে? বুঝিয়ে দাও ।
গ. শিক্ষা কিভাবে সুন্দর জীবন যাপনের জন্য নিয়ামক হয়- আলোচনা করে বুঝিয়ে দাও ।
ঘ. “শিক্ষা আমাদের গায়ের জ্বালা ও চোখের জল দু-ই দূর করবে। এ আশা সম্ভবত দুরাশা।”-উক্তিটির তাৎপর্য নিরূপণ করো।

১০ নং প্রশ্নের উত্তর ক

প্রমথ চৌধুরীর সাহিত্যিক বা ছদ্ম নাম ‘বীরবল’।

১০ নং প্রশ্নের উত্তর খ

মনে আনন্দ-উল্লাস না থাকলে আত্মার অপমৃত্যু হয়। মানুষের আত্মার খাদ্য হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের বিনোদন, আনন্দ, উল্লাস। এ পড়ে বলে আত্মার অপমৃত্যু ঘটে। সবের অভাবে মন নির্জীব ও শুষ্ক হয়ে যায়। মনের সজিবতা হারালে প্রাণের স্পন্দনও কমে আসে। আর তখনই মন নিরানন্দ হয়ে।

১০ নং প্রশ্নের উত্তর গ

শিক্ষা যেভাবে সুন্দর জীবন যাপনের জন্য নিয়ামক হয়- আলোচনা করা হলো:

১. যথার্থ জ্ঞানচর্চার মাধ্যমে শিক্ষা সুন্দর জীবন যাপনের জন্য নিয়ামক হয়।

২. শিক্ষা ছাড়া কোনো জাতির উন্নতি ভাবাই যায় না। যে জাতি যত শিক্ষিত সে জাতি তত উন্নত, তত সভ্য। যে জাতি উন্নত সে জাতিই পৃথিবীকে শাসন করছে। সে জাতি পৃথিবীর অন্যান্য জাতির কাছে অনুকরণীয়।

৩. শিক্ষাদীক্ষা হীন জাতি পদে পদে অবহেলিত হয়। শিক্ষার এ ক্ষমতার কারণেই জ্ঞানতাপসগণ শিক্ষাকে জাতির মেরুদণ্ড বলে আখ্যায়িত করেছেন। মেরুদণ্ডহীন মানুষ যেমন অথর্ব, মূল্যহীন, তেমনি শিক্ষাহীন জাতি পৃথিবীতে ক্রমশ অস্তিত্বহীন, অচল ও অসার হয়ে পড়ে। সুন্দর জীবন যাপনের শিক্ষা অবশ্যই অপরিহার্য।

শিক্ষা মানুষের অন্তর্নিহিত শক্তি জাগ্রত করে। সেই শক্তিতে মানুষ হয়ে ওঠে বিবেকবান, মানবিক এবং সৃজনশীল। এগুলো যদি মানুষের না থাকে তবে তাকে পশুর সাথে তুলনা করা হয়। শিক্ষাই মানুষের মাঝে সুপ্ত অবস্থায় থাকা এ গুণগুলো জাগিয়ে তুলে। তাই এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, সুখ- স্বাচ্ছন্দময় জীবন যাপনের জন্য শিক্ষা অপরিহার্য।

১০ নং প্রশ্নের উত্তর ঘ

 ১. “শিক্ষা আমাদের গায়ের জ্বালা ও চোখের জল দু-ই দূর করবে। এ আশা সম্ভবত দুরাশা” উক্তিটির তাৎপর্য অপরিহার্য।

২. অনেকের ধারণা, শিক্ষা হলো অর্থোপার্জনের মাধ্যম অর্থাৎ শিক্ষা অর্জন করে ব্যবহারিক জীবনে সে শিক্ষা কাজে লাগিয়ে বৈষয়িক উন্নতি করাই শিক্ষার লক্ষ্য বলে অনেকে মনে করে।

এ ধরনের লোকের কাছে শিক্ষার লক্ষ্য হলো চাকরি বাকরি লাভ তথা অর্থ উপার্জন। শিক্ষা যে মানুষের মনুষ্যত্বলোকে এক অন্য রকম পবিত্র নির্মল আলোর দিশারী এ দিকটা তারা মানতে রাজি নয়।

৩. উদ্দীপকে বলা হয়েছে আমাদের দেশের অধিকাংশ লোক শুধু বৈষয়িক বিবেচনায় শিক্ষাকে গুরুত্ব দেন। এ ধরনের ব্যক্তিদের শিক্ষা সম্পর্কে অভিমত হলো এই যে, শিক্ষা তাদের গায়ের জ্বালা ও চোখের জল দু-ই দূর করবে।

গায়ের জ্বালা ক্ষুধা নিবৃত্তির আর চোখের জ্বালা দুঃখ-দুর্দশা দূর করার জন্যই তারা শিক্ষাকে ব্যবহার করতে চায়। ‘বই পড়া’ প্রবন্ধেও লেখক এই দিকটি তুলে ধরেছেন ।

উদ্দীপক ও ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের তুলনামূলক বিশ্লেষণে বলা যায় যে, গায়ের ভেতর যে মত আছে, চোখের ভেতর যে স্বপ্ন আছে, এগুলোর জন্য যে শিক্ষার উপযোগিতা আছে এ বিষয়টি তারা মানতে নারাজ।

এ প্রসঙ্গে লেখক বলতে চেয়েছেন যে, যারা শিক্ষাকে শুধু বৈষয়িক দিক দিয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন তাদের সে আশা পূরণ হবার নয় । কেননা শিক্ষা নগদ প্রাপ্তির কোনো বিষয় নয় বরং মানুষের অন্তরলোকের ভেতর এক অনন্য সত্যের সন্ধান প্রদানকারী।

 

চাকিরর খবর ও নোটিশ পেতে আমাদের ফেইজবুক পেজটি ফলো করুন ও ইউটিউব চ্যানেলটি সাবক্রাইব করুন । অন্যান্য সব তথ্য পেতে আমাদের ওয়েব সাইটের সাথে থাকুন ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button