অন্যান্য

SSC | বাংলা ১ম পত্র | সুভা | সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর ১ থেকে ৫

সুভা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও ‍উত্তর সমুহ

বাংলা ১ম পত্রের সুভা গল্পটি হতে সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর গুলো পড়ুন এই পোস্টটি থেকে । এই পোস্টে সুভা গল্পের সকল গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর গুলো আলোচিত হয়েছে । সুতরাং পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন ।

অনুশীলনীর সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন – ০১ দুই পুত্র সন্তানের পর কন্যা সন্তান পলাশ বাবুর পরিবারে আনন্দের বন্যা বয়ে নিয়ে এলো; নাম রাখা হলো ‘কল্যাণী সকলের চোখের মণি কল্যাণী বেড়ে ওঠার সাথে সাথে পলাশবাবু বুঝতে পারলেন বয়সের তুলনায় কল্যাণীর মানসিক বিকাশ ঘটে নি। কিছু বললে ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকে। কল্যাণীর বিয়ের কথাবার্তা চলছে। পলাশ বাবু কল্যাণীর সবই বরপক্ষকে খুলে বললেন। সব শুনে বরের বাবা সুবোধ বাবু বললেন, ‘পলাশ বাবু কল্যাণীর মতো আমার ছেলেও তো হতে পারত, কাজেই কল্যাণী মা’কে ঘরে নিতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’

ক. সুভার গ্রামের নাম কী?
অথবা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কত সালে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন?
খ. পিতা-মাতার নীরব হৃদয়ভার’- কথাটির দ্বারা লেখক কী বোঝাতে চেয়েছেন?
গ. উদ্দীপকের প্রথম অংশের বক্তব্যে কল্যাণী ও সুভার যে বিশেষ দিকটির সঙ্গতি দেখানো হয়েছে- তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. কল্যাণী ও সুভা একই পরিস্থিতির শিকার হলেও উভয়ের প্রেক্ষাপট ও পরিণতি ভিন্ন-বিশ্লেষণ করো।

১ নং প্রশ্নের উত্তর ক

সুভার গ্রামের নাম চন্ডীপুর।
অথবা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পুরস্কার লাভ করেন ১৯১৩ সালে।

১ নং প্রশ্নের উত্তর খ

দয়ভার’ কথাটির দ্বারা লেখক প্রতিবন্ধী মেয়ে সুভার বিবাহ নিয়ে পিতা-মাতার উদ্বেগের কথা বোঝাতে চেয়েছেন। সুভার বড় দুই বোনের বিয়ে হয়ে গেলেও তার বিয়ে হচ্ছে না। কারণ সুভা বাকপ্রতিবন্ধী। কন্যাদায়গ্রস্ত পিতামাতা তাই সভার বিয়ে নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন। প্রতিবন্ধী মেয়েকে কেমন করে বিয়ে দেবেন এই দুর্ভাবনা তাঁদের হৃদয়ে পাথরের মতো চেপে বসে।

১ নং প্রশ্নের উত্তর গ

উদ্দীপকের প্রথম অংশের বক্তব্যে কল্যাণী ও সুভার প্রতিবন্ধিতা শিকারের সঙ্গতি দেখানো হয়েছে। জন্ম-মৃত্যু সবই সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছা-অনিচ্ছার উপর নির্ভর করে। জন্মের পর থেকেই দেখা যায় কিছু কিছু মানুষ প্রতিবন্ধিতার শিকার হয়। এসব প্রতিবন্ধিদের নিয়ে সমাজের মানুষ অবহেলা ও অবজ্ঞা করে থাকে।

মানসিকভাবে তারা নিজেকে খুব ছোট ভাবে এবং হীনমন্যতায় ভোগে। যা উদ্দীপকের কল্যাণী ও গল্পের সুভার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যে লক্ষ করা যায়।বাকপ্রতিবন্ধী একটি কিশোরীর প্রতি মমত্ববোধ প্রকাশিত হয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘সভা’ গল্পে। স্বাভাবিকভাবে জন্মালেও নিয়তি সুভাকে একজন বাক্প্রতিবন্ধী মানুষরূপে গড়ে তোলে।

উদ্দীপকের কল্যাণীর ক্ষেত্রে এই মিল লক্ষণীয়। উদ্দীপকের কল্যাণীও সুভার মতোই পরিবারে বয়ে নিয়ে এসেছিল আনন্দের বার্তা। কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে তার মানসিক বিকাশ পরিপূর্ণভাবে ঘটে না। অর্থাৎ কল্যাণী সমাজে বড় হয় বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হিসেবে। প্রতিবন্ধিতাই উদ্দীপকের কল্যাণী ও ‘সুভা’ গল্পের সুভার মধ্যে অসঙ্গতি দেখা যায়। তারা দু’জনই সমাজের আর দশজন স্বাভাবিক মানুষের মতো জীবনযাপন করতে পারে নি।

১ নং প্রশ্নের উত্তর ঘ

বাস্তবতাটি ইতিবাচক। কল্যাণী ও সুভা একই পরিস্থিতির শিকার হলেও গল্পের সুভার দুঃখজনক জীবন বাস্তবতার বিপরীতে উদ্দীপকের কল্যাণীরকল্যাণী ও সুভা দু’জনই প্রতিবন্ধিতার শিকার হলেও দু’জনের পরিণতি ভিন্ন। সমাজ-সংসার কল্যাণীর অনুকূলে আর সুভার প্রতিকূলে কাজ করেছে। একজন প্রতিবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে অন্যজন, বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারে নি।

‘সুভা’ গল্পের সুভা জন্ম থেকে বাকপ্রতিবন্ধী। বাক্প্রতিবন্ধী হলেও তার অনুভূতিপ্রবণ হৃদয়ে ভালোবাসার অভাব ছিল না। প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে সুভাকে কেউ বিয়ে করতে রাজি হয় নি। লোকনিন্দার ভয়ে তাই সুভার পরিবার গ্রাম ছেড়ে শহরে পাড়ি জমানোর সিদ্ধান্ত নেয়। উদ্দীপকের কল্যাণী একজন মানসিক প্রতিবন্ধী।

‘সুভা’ গল্পে আমরা কিশোরী সুভার নানারকম মানসিক অনুভূতির পরিচয় পেলেও মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় কল্যাণীর পক্ষে তা সম্ভব ছিল না। এরপরও কল্যাণীকে ঘরের বউ করে নিতে আপত্তি করেন নি শুভবুদ্ধিসম্পন্ন সুবোধ বাবু।উদ্দীপকের কল্যাণী ও ‘সুভা’ গল্পের সুভার প্রেক্ষাপট এক নয়। দুজনের প্রতিবন্ধকতা দু ধরনের। জীবনের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গিতেও রয়েছে ভিন্নতা।

তবে সুভাকে কেউ সহানুভূতির চোখে না দেখলেও কল্যাণীর প্রতি সদয় আচরণ করেছেন সুবোধ বাবু। কল্যাণীকে নিজের ছেলের বউ করে নিতে আপত্তি করেন নি তিনি। কল্যাণীর প্রতি তার হবু শ্বশুরের মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিই সুভার সাথে কল্যাণীর পার্থক্য সৃষ্টি করেছে। কল্যাণীর প্রতি মানবিক আচরণ করা হলেও সুভা ও তার পরিবারকে বরণ করতে হয়েছে বেদনাদায়ক পরিণতি । তাই যৌক্তিক কারণেই বলা যায় যে, তারা উভয়ে প্রতিবন্ধিতার শিকার হলেও তাদের প্রেক্ষাপট ও পরিণতি ভিন্ন।

অতিরিক্ত সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন ০২ শিলা দেখতে যেমন সুন্দরী, তেমনি বুদ্ধিতে প্রখর। কিন্তু জন্ম থেকেই সে বাক-প্রতিবন্ধী। কথা না বললেও সব কথা বুঝতে পারে সে। সে যখন বাইরে আসে প্রতিবেশী ছেলে মেয়েরা তাকে বিরক্ত করে। বড়রাও আড়ালে আবডালে তাকে নিয়ে কুৎসা রটনা করে। এতে শিলা খুব কষ্ট পায় তাই মানুষের সামনে সে যেতে ভয় পায়। মায়ের কাছেও সে প্রশ্রয় পায় না মা বিরক্ত হয়। এভাবে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সে একটু একটু করে সবার কাছ থেকে নিজেকে আড়াল করে নেয়।

ক. কে সুভার মর্যাদা বুঝত?
খ. সুভা নিজেকে বিধাতার অভিশাপ মনে করত কেন?
গ. উদ্দীপকে শিলার যে সংবেদনশীলতার পরিচয় পাওয়া যায় তার প্রতিফলন ব্যাখ্যা করো।
ঘ. সুভা ও শিলার মত বাক-প্রতিবন্ধীদের জন্য আমাদের কী দায়িত্ব রয়েছে? বিশ্লেষণসহ মতামত দাও।

২ নং প্রশ্নের উত্তর ক

প্রতাপ সুভার মর্যাদা বুঝত।

২ নং প্রশ্নের উত্তর খ

প্রতিবন্ধীতার কারণে সুভাকে নিয়ে তার পরিবারের লোকজন বড়ই উদ্বেগ ছিল বলে সুভা নিজেকে বিধাতার অভিশাপ মনে করত। সুভা কথা বলতে না পারলেও বাইরের জগতের সবকিছু সে অনুভব করত। সুভার এ ধরনের অনুভূতি প্রখরতার পরিচয় না জেনে অনেকেই তাকে নিয়ে দুশ্চিন্তা করত। ছোটবেলা থেকেই পরিবার ও বাইরের জগতের মানুষের কাছে বিরূপ আচরণের শিকার হতে হতে সে নিজেকে বিধাতার অভিশাপ ভাবতে শুরু করে।

২ নং প্রশ্নের উত্তর গ

উদ্দীপকে শিলার যে সংবেদনশীলতার পরিচয় পাওয়া যায় সুভার মাঝে সে নিজেকে আড়াল করার মাধ্যমে তার প্রতিফলন ঘটেছে। সংবেদনশীলতা হলো এক ধরনের অনুভূতির প্রখরতা। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ঘটনায় কষ্ট পাওয়া, আনন্দে উদ্বেগ হওয়া সংবেদনশীল মানুষের • বৈশিষ্ট্য।

সাধারণত শৈশবকাল থেকেই মানুষের মাঝে আস্তে আস্তে এই বৈশিষ্ট্যটি বিস্তার লাভ করতে থাকে ‘সুভা’। গল্পের সুভা ও শিলার মধ্যে এমনি সংবেদনশীল মনোভাব লক্ষ করা যায় । উদ্দীপকের শিলা জন্ম থেকেই বাক্ প্রতিবন্ধী। কিন্তু সে প্রতিবন্ধী হলেও দেখতে খুবই সুন্দরী এবং বুদ্ধিতে প্রখর। কথা বলতে না পারলেও সে সবকিছু অনুভব করতে পারে।

তার এই প্রতিবন্ধীতার কারণে প্রতিবেশী ছেলেমেয়েরা ও তার গর্ভধারিণী মা বিরক্ত এবং তারা তার নামে নানা ধরনের কুৎসা রটনা করে। এসব কারণে শিলা ভীষণ কষ্ট পায় এবং নিজেকে সবার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রাখে। ‘সুভা’ গল্পের সুভার মাঝে ও এমনি সংবেদনশীলতার পরিচয় পাওয়া পায়। প্রতিবন্ধী সুভাও বুঝতে পারে তাকে নিয়ে তার পরিবার চিন্তিত।

বাইরের লোকজন বিরক্ত, তাই সে নিজেকে সবার থেকে দূরে সরিয়ে রাখে। সুভা নিজে নিজে আলাদা একটি জগৎ তৈরি করেছে এবং সেই জগতের মাঝে নিজেকে ব্যস্ত রাখে। সে আশা করে, সবাই যেন তাকে ভুলে থাকে। তাই সঙ্গত কারণেই বলা যায়, উদ্দীপকের শিলার মাঝে যে সংবেদনশীলতা তা সুভার মাঝেও পরিলক্ষিত হয়।

২ নং প্রশ্নের উত্তর গ

সুভা ও শিলার মতো বাক-প্রতিবন্ধীদের জন্য আমাদের উপযুক্ত সমাজ তৈরি করতে হবে, যাতে তারা সুষ্ঠু বিকাশের সুযোগ পায়। প্রতিবন্ধীরা এখন আর আমাদের সমাজের বোঝা নয়। তাদেরকে উপযুক্ত সুযোগ দিলেও তারা এ দেশসেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সমর্থ হবে।

এজন্য পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের উচিৎ সুবিধা বঞ্চিত এসব শিশুদের উপযুক্তভাবে গড়ে তোলা । উদ্দীপকের শিলা একজন প্রতিবন্ধী। সে যথেষ্ট মেধাবিনী ও অনুভূতিশীল কিশোরী। প্রতিবন্ধিতার কারণে সে পরিবার ও প্রবিবেশিদের কাছে বোঝা। তাকে নিয়ে সবাই কুৎসা রটনা করে। তাই শিলা নিজেকে সবার কাছ থেকে আড়াল করে রাখে।

‘সুভা’ গল্পের সুভার ক্ষেত্রেও এক ঘটনার অবতারণা লক্ষ করা যায়। সেও পরিবার ও সমাজ থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখে। কারণ সে বুঝতে পারে সবার কাছে সে অবাঞ্চিত । উদ্দীপকের শিলা ও ‘সুভা’ গল্পের সুভা উভয়ের ক্ষেত্রেই আমরা লক্ষ করি তার সমাজে বিকৃত ও অসভ্য মানুষের নিষ্ঠুর আচরণের শিকার। কিন্তু সমাজের মানুষের বোঝা উচিৎ যে, এরা আমাদেরই কারো না কারো স্বজন।

এদের বিবেক, বুদ্ধি, মেধা যথেষ্ট। শুধু উপযুক্ত পরিবেশের অভাবে তারা বিকশিত হতে পারে না। উপযুক্ত শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও যত্ন নিয়ে তারাও দেশের মূল্যবান সম্পদে পরিণত হবে। প্রতিবন্ধীদের রয়েছে অনুভূতির এক জগৎ। সেই জগৎকে আমাদের বুঝতে হবে এবং শ্রদ্ধা করতে হবে। তাদেরকে মানুষ হিসেবে মূল্যায়ন করতে হবে।

সুভা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও ‍উত্তর সমুহ:

প্রশ্ন ০৩ বাবু একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী কিশোর। পরিবারের অনেকে তাকে ‘কানা’ মনে করে তার প্রতি অবহেলা প্রদর্শন করে। বাবু নিজেকে বড় একা মনে করে। সংসারে সে যেন একটা জীবন্ত অভিশাপ। নিজের মাও তাকে তিরস্কার, গঞ্জনা করতে ছাড়ে না। কিন্তু বাবা মাহমুদ সাহেব বাবুকে খুব ভালোবাসেন। তাকে সারাক্ষণ আগলে রাখার চেষ্টা করেন। তার অনুভূতিগুলো বোঝার চেষ্টা করেন।

ক. কিশলয় শব্দের অর্থ কী?
খ. গোসাইদের ছোট ছেলেটির পরিচয় দাও।
গ. উদ্দীপকের বাবু ‘সুভা’ গল্পের যে চরিত্রের প্রতিনিধিত্ব করে, তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. “উদ্দীপকের মাহমুদ সাহেব ‘সুভা’ গল্পের বাণীকন্ঠেরই প্রতিরূপ”- উক্তিটির যথার্থতা নিরূপণ করো।

৩ নং প্রশ্নের উত্তর ক

‘কিশলয়’ শব্দের অর্থ গাছের নতুন পাতা।

৩ নং প্রশ্নের উত্তর খ

গোসাইদের ছোট ছেলেটির নাম প্রতাপ। যে নিতান্তই অকর্মণ্য। সে সংসারের কোনো কাজ করে না। তার দ্বারা সংসারের কোনো উন্নতি হবে এ আশা ভরসা তার বাবা-মা একেবারেই ছেড়ে দিয়েছেন। তবে প্রতাপের একটা শখ ছিলো, তা হলো ছিপ ফেলে মাছ ধরা। অপরাহে তাকে প্রায়ই এই কাজ করতে দেখা যেত। সুভার সঙ্গে তার বেশ সখ্যতা গড়ে ওঠেছিল। তার মধ্যে ছিল আবেগ, অনুভূতি ও ভালোবাসার মতো হৃদয় ।

৩ নং প্রশ্নের উত্তর গ

শারীরিক প্রতিবন্ধিতা ও সমাজ সংসারে বিড়ম্বনার শিকারের দিক হতে উদ্দীপকের বাবু ‘সুভা’ গল্পের সুভা চরিত্রের প্রতিনিধিত্ব করে। আমাদের সমাজে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুরা পরিবার, সমাজ ও সংসারে নানাভাবে অবহেলা ও বিড়ম্বনার শিকার হয়। কিন্তু সমাজ সচেতন মানুষদের ভাবতে হবে এ পরিস্থিতির জন্য তারা নিজেরা কখনো দায়ী নয়।

তাই বিবেকহীন মানুষের মতো তাদের নিয়ে কখনো তাচ্ছিল্য ও উপহাস করা উচিৎ নয়। উদ্দীপকের বাবু দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এক কিশোর। পরিবারের লোকজন তার এই অবস্থাকে ভালো চোখে দেখে নি। এমনকি তার নিজের মাও বাবুকে নিয়ে অবহেলা করেছে। একমাত্র বাবা ব্যতীত সবাই তাকে তিরস্কার গঞ্জনা করেছে এবং তার প্রতি অবহেলা প্রদর্শন করেছে।

বাবুর মতোই ‘সুভা’ গল্পের সুভাও জন্ম থেকেই বাকশক্তিহীন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন এক কিশোরী। তাই সকলের *অবহেলার শিকার সে। এমনকি তার মা পর্যন্ত তার ওপর বিরক্ত। নিজের প্রতি সকলের এমন বৈরী মনোভাব সে বুঝতে পেরে সব সময় নিজেকে সে পরিবার ও সমাজ থেকে গুটিয়ে রাখে ।

এ দিক বিবেচনায় তাই বলা যায়, শারীরিক প্রতিবন্ধিতার শিকার হওয়ার দিক থেকে উদ্দীপকের বাবু ‘সুভা’ গল্পের সুভা চরিত্রটির প্রতিনিধিত্ব করে।

SSC | বাংলা ১ম পত্র | সুভা | সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর ১ থেকে ৫
SSC | বাংলা ১ম পত্র | সুভা | সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর ১ থেকে ৫

৩ নং প্রশ্নের উত্তর ঘ

প্রশ্নোক্ত উক্তিটি যথার্থ। প্রত্যেক বাবাই তার সন্তানকে ভালোবাসে। সন্তান যতই কুৎসিত, খারাপ, প্রতিবন্ধী হোক না কেন বাবা তাকে অনাদর, অবহেলা করে না। সন্তানের জন্য বাবার থাকে প্রাণভরা আশীর্বাদ ও ভালোবাসা। বিশেষ করে যারা একটু দুষ্টু প্রকৃতির ও শারীরিক দিক দিয়ে প্রতিবন্ধী তাদের প্রতি বাবার খেয়াল থাকে একটু বেশি।

যা উদ্দীপকের ‘সুভা’ গল্পের বাবু ও সুভার বাবার মধ্যে লক্ষ করা যায় । উদ্দীপকের বাবু একজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী কিশোর। পরিবারের সবাই তাকে অবহেলা-অনাদর করে। এমনকি বাবুর গর্ভধারিণী মাও তাকে তিরস্কার গঞ্জনা করেন। কিন্তু বাবুর বাবা বাবুকে খুব ভালোবাসেন। তাকে সারাক্ষণ আগলে রাখেন। তার অনুভূতিগুলো বোঝার চেষ্টা করেন। ‘সুভা’ গল্পের সুভাও সমাজের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন এক কিশোরী।

বাবা ছাড়া পরিবারের সবাই তাকে বোঝা মনে করেন । সুভার মা সুভাবে নিজের গর্ভের কলঙ্ক হিসেবে জ্ঞান করলেও বাবা তাকে অন্যদের থেকে একটু বেশিই ভালোবাসা দেয় । ‘সুভা’ গল্পের সুভার বাবা সুভাকে অত্যন্ত ভালোবাসেন।

পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা সুভাকে নিয়ে নানা কটুকথা বললেও বাবা সুভাকে নিয়ে কোনো ধরনের তিরস্কার বা ঠাট্টা করে নি বরং সুভা যাতে সমাজের আর দশজন মানুষের মতো বাঁচতে পারে সেদিকে অনুপ্রেরণা দিয়েছে। উদ্দীপকের বাবুর বাবার ক্ষেত্রেও একই ধরনের মানসিকতা লক্ষ করা যায়।

বাবুকে নিয়ে যেখানে সংসারের সবাই অবহেলা করেছে সেখানে মাহমুদ সাহেব সন্তানকে বেশি ভালোবাসা দিয়েছেন। সন্তানের যাতে কোনো ধরনের ক্ষতি না হয় সেদিকে খেয়াল দিয়েছেন। তাই সঙ্গত কারণেই বলা যায় যে, উদ্দীপকের মাহমুদ সাহেব ‘সুভা’ গল্পের বাণীকণ্ঠেরই প্রতিরূপ।

বাংলা ১ম পত্রের সুভা গল্প হতে সৃজশীল প্রশ্রোত্তর:

প্রশ্ন । ০৪। সাবিনা ও শাকিলের সুখের সংসার। ঘরে তাদের দুই পুত্র সন্তান। স্বামী-স্ত্রীর খুব শখ একটা কন্যা সন্তানের। বছর দুয়েক পর তাদের ঘরে ফর্সা ফুটফুটে এক কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। সাবিনার কী যে আনন্দ! কিন্তু দশবছর বয়সেও মেয়েটি সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। সাবিনার বুঝতে বাকি থাকেনা মেয়ে প্রত্যাশা প্রতিবন্ধী। মেয়ের এ অবস্থায় সাবিনার দুশ্চিন্তার সীমা থাকে না, সে ভাবে এ তার পাপের ফসল । ভবিষ্যতে মেয়েকে পাত্রস্থ করবে কীভাবে এ ভাবনায় নানা উদ্বেগের সাথে তার দিন কাটে।

ক. ‘সুভা’ গল্পটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কোন গ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে?
খ. সুভা নিজেকে সর্বদা গোপন রাখার চেষ্টা করত কেন?
গ. উদ্দীপকের প্রত্যাশা চরিত্রটি ‘সুভা’ গল্পের কোন চরিত্রের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা করো ৷
ঘ. শারীরিক প্রতিবন্ধী সন্তানকে ঘিরে সুভার মায়ের দৃষ্টিভঙ্গি ও সাবিনার দুশ্চিন্তার বিষয়টি বর্তমান সমাজ প্রেক্ষাপটের আলোকে বিশ্লেষণ করো।

৪ নং প্রশ্নের উত্তর ক

‘সুভা’ গল্পটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘গল্পগুচ্ছ’ থেকে সংকলিত হয়েছে।

৪ নং প্রশ্নের উত্তর খ

১. প্রতিবন্ধী সুভা বুঝতে পারে সমাজ-সংসার তাকে বোঝা মনে করে তাই সব সময় সে নিজেকে গোপন রাখার চেষ্টা করত। ২. সুভা বোবা ছিল বলে তার ভবিষ্যৎ নিয়ে সবাই দুশ্চিন্তায় ছিল। কথা না বলতে পারলেও তার মধ্যে যে এক ধরনের অনুভূতি শক্তি আছে এ কথাটি কেউ ভাবত না।

শিশুকাল থেকেই সুভা বুঝে গিয়েছিল যে, সংসারে সে কারো কাছেই সুদৃষ্টিপ্রাপ্ত নয় । এর ফলে তার ভেতরে এক ধরনের হীনমন্যতা তৈরি হয়েছিল । তাই সে নিজেকে সবার কাছ থেকে আড়াল করে রাখার চেষ্টা করত।

৪ নং প্রশ্নের উত্তর গ

অবহেলা ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্নতার দিক থেকে প্রত্যাশা ও সুভার মধ্যে সাদৃশ্য লক্ষ করা যায়। প্রতিবন্ধীরা সমাজে অন্যান্য মানুষের মত স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারে না। তারা সব সময় নিজেকে গুটিয়ে রাখে এবং এক হীনমন্যতায় ভোগে। পরিবারও কোনো কোনো সময় তাদের সঙ্গে রূত্ব আচরণ করে থাকে।

বিশেষত প্রতিবন্ধী সন্তানের মা তার প্রতিবন্ধী সন্তানকে নিয়ে বড় দুশ্চিন্তায় ভোগেন। যা উদ্দীপকের প্রত্যাশা ও ‘সুভা’ গল্পের সুভার মধ্যে প্রতিফলিত হয়েছে। ‘সুভা’ গল্পের সুভা বাক্শক্তিহীন এক গ্রাম্য কিশোরী। বাকশক্তিহীন হওয়ার কারণে মা তার জন্মকে গর্ভের কলঙ্ক হিসেবে ধরে নেয়।

পারিবারিক ও সামাজিকভাবে সবাই তার ভবিষ্যত সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করে। সবার কাছ থেকে অবহেলা পেয়ে সুভা এক সময় নিজেকে গুটিয়ে নেয়। উদ্দীপকের প্রত্যাশা মেয়েটিও শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় ব্যক্তিগতভাবে দুঃখী। তার মাও মেয়ের এ অবস্থার কারণে বিরক্ত।

প্রত্যাশার মা সন্তানকে পাপের ফল মনে করেন এবং তার বিয়ের ব্যাপারে উদ্বিগ্ন থাকেন। এসব দিক থেকে প্রত্যাশা চরিত্রের সঙ্গে ‘সুভা’ গল্পের সুভা চরিত্রটি সাদৃশ্যপূর্ণ।

৪ নং প্রশ্নের উত্তর ঘ

শারীরিক প্রতিবন্ধী মেয়ে সুভাকে নিয়ে তার মায়ের দৃষ্টিভঙ্গি ও সাবিনার দুশ্চিন্তার বিষয়টি বর্তমান সামাজিক প্রেক্ষাপটের আলোকে অনেকাংশে যুক্তিহীন। প্রতিবন্ধী হওয়া ব্যক্তি মানুষের কোনো দোষ নয়, এটি প্রকৃতিগত। প্রতিবন্ধিতা সামাজিক সমস্যা হলেও পূর্বের মতো এখন আর অতটা সমস্যা নয়।

পরিবার, ব্যক্তি, সমাজ ও সরকার এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন এবং কঠোরভাবে তাদের প্রতি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। উদ্দীপকে বর্ণিত সাবিনার দুশ্চিন্তার কারণ তার মেয়ের ভবিষ্যৎ। সাবিনার মেয়ের প্রতিবন্ধিতায় বিরক্ত হয় এবং এ অবস্থাকে নিজের পাপের ফসল বলে মনে করে।

একই ধরনের মনোভাব লক্ষণীয় ‘সুভা’ গল্পে বর্ণিত সুভার মায়ের মাঝে। সুভা বাক্প্রতিবন্ধী কিশোরী হবার কারণে সে সমাজে যেমন অবহেলিত ছিল তেমনি তার মায়ের কাছেও ছিল অনাদৃত। সুভার জন্মকে তার মা নিজের গর্ভের কলঙ্ক মনে করে। অর্থাৎ সুভার ক্ষেত্রে তার মায়ের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল অত্যন্ত সংকীর্ণ।ৎ

কিন্তু বর্তমান সমাজের প্রেক্ষাপটে এ ধরনের মনোভাব অনেকাংশে অযৌক্তিক। কারণ সরকার প্রতিবন্ধিদের পক্ষে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা বর্তমান সময়েও অন্যতম সামাজিক সমস্যা হিসেবে বিবেচিত। কিন্তু এখন শারীরিক প্রতিবন্ধীরা যাতে অবহেলার শিকার না হয় সে ব্যাপারে নানা ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

প্রতিবন্ধিতার জন্য মানুষ নিজে দায়ী নয়। তাই শারীরিক প্রতিবন্ধকতার বিচারে কাউকে মূল্যায়ন করা অযৌক্তিক। উপরন্তু শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বর্তমান সময়ে প্রতিবন্ধীরা এই প্রতিকূলতাকে কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। তাই বলা যায়, আধুনিক সময়ের প্রেক্ষাপটে উদ্দীপকের সাবিনার বা ‘সুভা’ গল্পের সুভার মায়ের দৃষ্টিভঙ্গি যথার্থ নয় ।

এসএসসি পরিক্ষায় কমন ‍উপযোগী সুভা গল্পের সৃজনশীল: 

প্রশ্ন ৫ দশম শ্রেণির ছাত্র মাহফুজ যথেষ্ট মেধাবী। কিন্তু তার একটি পা খোঁড়া। ক্র্যাচে ভর দিয়ে স্কুলে যায়। মাহফুজের বাবা রোজ স্কুলের গেটে তাকে দিয়ে আসেন আবার ছুটির সময় এসে নিয়ে যান। বাবা মাহফুজকে খুব ভালোবাসেন; তার সব বায়না মিটিয়ে দেন। স্কুলের শিক্ষকগণ ও ছাত্ররা তাকে সহযোগিতা করে। আবার কেউ কেউ খোঁড়া বলে বিরক্ত করে। তখন তার মন খারাপ হয়ে যায়। বাবা তাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলে ‘তুমি অনেক বড় হয়ে সবাইকে বুঝিয়ে দেবে জীবনে সফল হবার ক্ষেত্রে পঙ্গু হওয়াটা কোনো বাধা নয়। প্রতাপ সুভাকে কী বলে ডাকত?

ক. প্রতাপ সুভাকে কী বলে ডাকত?
খ. মা সুভাকে নিজের গর্ভের কলঙ্ক মনে করত কেন?
গ. উদ্দীপকের ভাববস্তু ‘সুভা’ গল্পের কোন দিক নির্দেশ করে-ব্যাখ্যা করো ।
ঘ. উদ্দীপকের মাহফুজের বাবা কী গল্পের সুভার বাবার সম্পূর্ণ প্রতিনিধিত্ব করে? তোমার সপক্ষে যুক্তি দাও ।

৫ নং প্রশ্নের উত্তর ক

প্রতাপ সুভাকে ‘সু’ বলে ডাকত।

৫ নং প্রশ্নের উত্তর খ

সুভা প্রতিবন্ধী, তাই তার মা তাকে নিজের গর্ভের কলঙ্ক মনে করত। বাক্প্রতিবন্ধী সুভার কথা বলার ক্ষমতা নেই বলে সে সবার কাছে মূল্যহীন ও অপ্রয়োজনীয়। মায়েরা সন্তানদের সব সময়ই নিজের একটা অংশ মনে করে।

পুত্র সন্তানের চেয়ে কন্যা সন্তানের ক্ষেত্রে তাদের এ বোধটি আরও প্রবল হয়ে থাকে। মেয়ে প্রতিবন্ধী হওয়ার জন্য সুভার মা নিজেকেই দায়ী বলে ভাবত। তাই সুভাকে সে গর্ভের কলঙ্ক মনে করত এবং তার ওপর বিরক্তিবোধ করত।

৫ নং প্রশ্নের উত্তর গ

উদ্দীপকের ভাববস্তু ‘সুভা’ গল্পের সন্তানের প্রতি বাবার সহানুভূতি ও স্নেহের দিক নির্দেশ করে। প্রত্যেক সন্তানই তার বাবার কাছে প্রিয়। বাবা তার হৃদয় নিংড়ানো সমস্ত ভালোবাসা উজাড় করে সন্তানকে ভালোবাসেন। প্রতিবন্ধী সন্তানের ক্ষেত্রে বাবারা স্বাভাবিক সন্তানের চেয়ে বেশি যত্নশীল। সস্তানকে সাহস ও মনোবল জোগানোর জন্য বাবা অনন্য ভূমিকা পালন করে থাকেন। যা উদ্দীপকের ভাববস্তু ও গল্পের ভাববস্তুতে ফুটে উঠেছে।

উদ্দীপকে দেখা যায়, মাহফুজ প্রতিবন্ধী হওয়ায় তার বাবা তার প্রতি খুবই সহানুভূতিশীল। তার একটি পা খোঁড়া হওয়ায় তার বাবা প্রতিদিন ক্র্যাচে করে মাহফুজকে স্কুলে পৌঁছে দেয়। স্কুলের কেউ কেউ তাকে খোঁড়া বলে বিরক্ত করলে তার বাবা তাকে সান্ত্বনা দেয়। সন্তানকে সে কখনো অবহেলা করে না।

উদ্দীপকের মাহফুজের বাবার মতো ‘সুভা’ গল্পের সুভার বাবাও সুভার প্রতি যথেষ্ট সহানুভূতিশীল। সুভার মা সুভাকে নানা কটুকথা বললেও তার বাবা তাকে অত্যন্ত ভালোবাসেন। কিন্তু প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভালোবাসা পাওয়ার দাবি রাখলেও সুভা ও মাহফুজ তাদের প্রত্যাশিত ভালোবাসা পায় নি। সমাজের কাছে দু’জনই বোঝা ও অভিশাপ হিসেবে গণ্য হয়েছে।

৫ নং প্রশ্নের উত্তর ঘ

পিতৃসুলভ মমত্ববোধের প্রকাশে উদ্দীপকের মাহফুজের বাবা ও ‘সুভা’ গল্পের সুভার বাবার মাঝে মিল থাকলেও সন্তানকে অনুপ্রেরণা জোগানোর দিক থেকে সুভার বাবা মাহফুজের বাবার সম্পূর্ণ প্রতিনিধিত্ব করে না ।

পৃথিবীর প্রত্যেক বাবাই তার সন্তানকে ভালোবাসেন। সন্তান যতই কুৎসিত, দুষ্টু, প্রতিবন্ধী হোক না কেন সন্তানের জন্য বাবার থাকে প্রাণভরা আশীর্বাদ ও ভালোবাসা। বিশেষ করে প্রতিবন্ধী সন্তানের প্রতি বাবাদের খেয়াল থাকে অন্যরকম। যা মাহফুজের বাবা ও সুভার বাবার মধ্যে লক্ষণীয়।

‘সুভা’ গল্পের সুভা সমাজের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন এক কিশোরী। বাবা ব্যতীত সবাই তাকে বোঝা মনে করে এবং ছোটবেলা থেকেই তাকে এ মনোভাবটির সাথে পরিচিত হতে হয়। সুভার মা তাকে নিজের গর্ভের কলঙ্ক হিসেবে জ্ঞান করলেও বাবা তাকে অন্যদের থেকে বেশি ভালোবাসা দেয়।

তবে সমাজবাস্তবতার প্রতিকূলতা মোকাবিলার ক্ষেত্রে অসহায়ত্বের পরিচয় দেয় সে। উদ্দীপকের মাহফুজের ক্ষেত্রে তার খোঁড়া পা স্বাভাবিক জীবনযাপনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়ায়। অনেকের ঠাট্টা-বিদ্রুপের শিকার হলেও তার মনোবল বজায় রাখতে বাবা তাকে উৎসাহ দেয় এবং সার্বিক সহায়তা করে। তাকে বড় হবার স্বপ্ন দেখায়।

সুভার ক্ষেত্রেও তার বাবার ভালোবাসার দিকটি দেখা গেছে। কিন্তু প্রেক্ষাপটগত ভিন্নতার কারণে তার মাঝে আমরা ভিন্ন ধরনের আচরণ লক্ষ করি। উদ্দীপকের মাহফুজের বাবা ও গল্পের সুভার বাবা দুজনেই নিজ নিজ সন্তানকে গভীরভাবে ভালোবাসেন। কিন্তু উদ্দীপকের মাহফুজের বাবা সন্তানের মাঝে প্রতিবন্ধকতা জয়ের জন্য মানসিক শক্তি জোগান।

তাকে লেখাপড়া শিখিয়ে আদর্শ মানুষে পরিণত করার স্বপ্ন দেখেন। এর বিপরীতে সুভার বাবা মেয়েকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভোগেন। লোকলজ্জার ভয়ে মেয়েকে বিয়ে দিতে কলকাতায় যাওয়ার উদ্যোগ নেন। ফলে মাহফুজ প্রতিবন্ধী হলেও যেমন সুন্দর জীবনের স্বপ্ন দেখতে পারে তেমন সৌভাগ্য হয় না সুভার।

সুভার জন্য তার বাবা এমনভাবে অনুপ্রেরণাদাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারেন নি বলেই উদ্দীপকের মাহফুজের বাবা ও সুভার বাবা চরিত্রটি সম্পূর্ণরূপে একই ধারায় প্রবাহিত হয় নি.। তাই এসব বিবেচনায় বলা যায়, উদ্দীপকের মাহফুজের বাবা ‘সুভা’ গল্পের সুভার বাবার সম্পূর্ণ প্রতিনিধিত্ব করে না।

 

চাকিরর খবর ও নোটিশ পেতে আমাদের ফেইজবুক পেজটি ফলো করুন ও ইউটিউব চ্যানেলটি সাবক্রাইব করুন । অন্যান্য সব তথ্য পেতে আমাদের ওয়েব সাইটের সাথে থাকুন ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button