অন্যান্য

SSC | বাংলা ১ম পত্র | সুভা | সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর | ৬-১০

সুভা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

SSC পরিক্ষায় কমন উপযোগী বাংলা ১ম পত্রটির সুভা গল্পটি হতে গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আজকের বিশেষ প্রস্তুতি । সুতরাং পোস্টটি পড়তে থাকুন ।

বাংলা ১ম পত্রের সুভা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর সমুহ:

প্রশ্ন ০৬ জুঁই ফুটফুটে এক শিশু, কিন্তু জন্ম থেকেই সে বাকপ্রতিবন্ধী। কথা না বললেও সব বুঝতে পারে সে। জুইয়ের অন্তর্দৃষ্টি খুবই প্রখর। সে যখন বাড়ির বাইরে আসে প্রতিবেশী ছেলেমেয়েরা তাকে বিরক্ত করে। জুঁই এ্যা এ্যা বলে চিৎকার করে। সবাই এতে আরও মজা পায়। বড়রাও তাকে এভাবে বিরক্ত করে। জুঁই এতে খুব কষ্ট পায়; মানুষের সামনে যেতে ভয় পায়। সে অন্য শিশুদের মতো বাঁচতে চায়, কিন্তু প্রতিবন্ধিতার কারণে তা পারে না।

ক কে সুভার মর্যাদা বুঝত?
খ. সুভাকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলো কেন?
গ. উদ্দীপকের জুঁই ‘সুভা’ গল্পের কোন চরিত্রের প্রতিনিধি? ব্যাখ্যা করো।
ঘ সুভা ও জুঁইয়ের মতো সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য আমাদের কী দায়িত্ব রয়েছে? বিশ্লেষণী মতামত দাও।

৬ নং প্রশ্নের উত্তর ক

প্রতাপ সুভাৱ মর্যাদা বুঝত।

৬ নং প্রশ্নের উত্তর খ

লোকলজ্জার ভয় ও বিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে সুভাকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলো। সুভার বয়স ক্রমেই বেড়ে চলছিল। তৎকালীন সমাজে তার বয়সের মেয়েদের বিয়ে না হলে তা নিয়ে নিন্দা করা হতো। সুভা বাকপ্রতিবন্ধী হওয়ায় তাকে বিয়ে করতে রাজি হয় না কেউ।

ফলে তার পরিবারকে নিয়ে সমালোচনা বাড়তে থাকে। উপরন্তু সুভার বাবা সচ্ছল গৃহস্থ হওয়ায় তার কিছু শত্রুও ছিল। তাদের প্ররোচনায় পরিবারটিকে একঘরে করা হবে বলেও গুজব ছড়ায়। এ কারণেই সুভাকে বিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলো।

৬ নং প্রশ্নের উত্তর গ

শারীরিক প্রতিবন্ধকতা ও সমাজ-সংসারে বিভিন্ন বিড়ম্বনার শিকারের দিক থেকে উদ্দীপকের জুঁই ‘সুভা’ গল্পের সুভা চরিত্রের প্রতিনিধি। সমাজের অনেকেই বাকপ্রতিবন্ধীদের নিয়ে নানা রকম উপহাস করে। কিন্তু তাদের ভাবতে হবে এই পরিস্থিতির জন্য সে দায়ী নয়, বিবেকহীন মানুষের মতো তারা তাদের নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে।

প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কটাক্ষ করা কোনো মানুষেরই কাম্য নয়। ‘সুভা’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র সুভা। জন্ম থেকেই সে বাক্শক্তিহীন। তাই সে সকলের অবহেলার শিকার। এমনকি তার মা পর্যন্ত তার ওপর বিরক্ত। নিজের প্রতি সকলের এমন বিরূপ মনোভাব অনুধাবন করতে পারে সুভা। তাই নিজেকে সে অন্যদের থেকে সবসময় গুটিয়ে রাখে। উদ্দীপকে বর্ণিত জুঁইও সুভার মতোই বাক্প্রতিবন্ধী। শারীরিক ত্রুটির কারণে সবাই তাকে উপহাস করে।

মানুষ হিসেবে যথাযোগ্য মূল্যায়ন সে পায় না। তাই সে মানুষের সামনে নিজেকে প্রকাশ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না। নিজেকে সে খুব অসহায় বোধ করে। তাই এ দিক থেকে বলা যায়, শারীরিক প্রতিবন্ধিতা ও সমাজ-সংসারের বিড়ম্বনার দিক হতে উদ্দীপকের জুই ‘সুভা’ গল্পের সুভার সার্থক প্রতিনিধি।

৬ নং প্রশ্নের উত্তর ঘ

সুভা ও জুঁইদের মতো সুবিধাবঞ্চিতদের সুষ্ঠু বিকাশের জন্য উপযুক্ত সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখা আমাদের সবার দায়িত্ব রয়েছে। প্রতিবন্ধীরা এখন আর সমাজ সংসারের বোঝা নয়। তাদের রয়েছে যথেষ্ট মেধা। এই মেধাকে জাগ্রত করতে পারলে তারা ও সমাজ ও দেশের নানা কাজে আসবে। তাই প্রতিবন্ধীদের সুষ্ঠু বিকাশের দায়িত্ব সবার।

‘সুভা’ গল্পে বর্ণিত সুভা বাক্শক্তিহীন এক গ্রাম্য কিশোরী। শারীরিক ত্রুটির কারণে সে সবার কাছে অবহেলার শিকার হয়। এমনকি নিজের মা-ও তাকে গর্ভের কলঙ্ক বলে মনে করে। সুভা বুঝতে পারে সবাই তাকে বোঝা বলে ধরে নিয়েছে। ফলে নিজেকে সবার কাছ থেকে আড়াল করে নীরবে যন্ত্রণায় ভোগে সে।

উদ্দীপকে বর্ণিত জুঁইয়ের জীবনও প্রতিবন্ধকতার শিকার। জন্ম থেকেই সে বোবা। এ কারণে সে সমবয়সীদের উপহাসের পাত্র। এক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকে না বিবেকহীন কিছু পূর্ণবয়স্ক মানুষও। সুন্দর জীবনের প্রত্যাশী জুঁইয়ের জীবন তাই আঁধারে ঢাকা।

গল্পের সুভা ও উদ্দীপকের জুঁই উভয়ের ক্ষেত্রেই আমরা মানুষের নিষ্ঠুর আচরণের স্বরূপ দেখতে পাই। কিন্তু আমাদের বোঝা উচিত যে, প্রতিবন্ধীরা সমাজের বোঝা নয়। সঠিক সুযোগ পেলে তারাও দেশের সম্পদে পরিণত হতে পারে। প্রতিবন্ধীদেরও রয়েছে নিজস্ব এক অনুভূতির জগৎ।

সেই অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে হবে। মানুষ হিসেবে তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করতে হবে। তাদের জন্য শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। এভাবে সবাই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলে প্রতিবন্ধীরা নিজেদের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হবে।

গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর দেওয়া হলো সুভা গল্প হতে

প্রশ্ন ০৭ অভাবের সংসার ধলা মিয়ার। সব কিছু হারিয়ে এখন একটি গাভীই তার শেষ সম্বল। সংসারের চাহিদা মেটাতে তিনি তার গাভীকে বিক্রির জন্য গোয়ালঘরে যান। তিনি দেখতে পান দশ বছরের বাকপ্রতিবন্ধী মেয়ে লতা গাভীর গলা জড়িয়ে ধরে অ্যাঁ অ্যাঁ করে কী যেন বলছে। ধলা মিয়া এ দৃশ্য দেখে অবাক হন এবং তাদের ভাষা বুঝতে পারেন। তাই তিনি গাভীকে বিক্রি না করার সিদ্ধান্ত নেন।
ক. সুভার বাবাকে সবাই কী নামে ডাকতে?
খ. সুভা কলকাতার যেতে চায় না কেন?
গ. উদ্দীপকের লতার সঙ্গে ‘সুভা’ গল্পের সুভার সাদৃশ্য নির্ণয় করো।
घ. ‘উদ্দীপকের মূলভাব ‘সুভা’ গল্পের সমগ্র ভাবকে ধারণ করে না’—উক্তিটি বিশ্লেষণ করো।

৭ নং প্রশ্নের উত্তর ক

সুভার বাবাকে সবাই বাণীকন্ঠ নামে ডাকতো ।

৭ নং প্রশ্নের উত্তর খ

বাকপ্রতিবন্ধী সুভার মাঝে তার বাড়ির প্রতি রয়েছে গভীর মমত্ববোধ। বাড়ির চারপাশের প্রকৃতির সাথে সে করে নিয়েছে মিতালি। বোবা হওয়ার কারণে তার তেমন কোনো বন্ধু নেই। গোয়ালের দুটি গাভী, ছাগল, বিড়ালশাবক আর মানবসমাজের অন্তর্ভুক্ত প্রতাপ তার নিত্য সহচর। এদেরকে ঝেড়ে কলকাতায় অনিশ্চয়তাভরা জীবনকে মেনে নিতে সায় দেয় না সুভার মন। এ সব কারণে সুভা কলকাতায় যেতে চায় না।

৭ নং প্রশ্নের উত্তর গ

গৃহপালিত পশুর সঙ্গে মনের ভাব আদান-প্রদানের দিক থেকে উদ্দীপকের লতার সঙ্গে ‘সুভা’ গল্পের সুভার সাদৃশ্য বিদ্যমান বাকপ্রতিবন্ধীরা কথা বলতে পারে না। তাই বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি ও ইশারা-ইঙ্গিতের মধ্যে দিয়ে তারা তাদের মনোভাব প্রকাশ করে থাকে।

মনুষ্যকুল তাদের এ ধরণের আচরণে বিব্রতবোধ করে। তাই এ ধরণের প্রতিবন্ধীরা অবোধ গৃহপালিত পশুদের সঙ্গে তাদের মিতালি করে থাকে। যা উদ্দীপকের লতা ও গল্পের সুভার মধ্যে লক্ষ করা যায়।’সুভা’ গল্পে দেখা যায়, সুভার জগৎটা অন্যদের থেকে আলাদা। ‘বাক্প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে তার কোনো বন্ধু নেই।

কেউ তার সাথে মেশে না বলেই তার সখ্যতা গড়ে উঠেছে গৃহপালিত প্রাণীর সাথে। বাক্প্রতিবন্ধী এ কিশোরীর বন্ধু দুটো গাভী। পুরো পৃথিবীতে যারা নিশ্চুপ তাদের কাছেই মুখর সুভা। উদ্দীপকের বর্ণিত লতাও গল্পের সুভার মতোই বাক্প্রতিবন্ধী। সুভার মতোই পশুর সাথে তার রয়েছে নিবিড় সখ্যতা।

পোষা ছাগল দুটির কাছে সে মনের কথা বলে। তাদের বিক্রি করে দেওয়ার খবরে তার সু চোখ বেয়ে জল পড়ে। ‘সুভা’ গল্পেও আমরা দেখি গাভী দুটির সাথে সুভার গভীর মমত্বপূর্ণ সম্পর্কের স্বরূপ। এ দিকগুলোই উদ্দীপকের লতা ও গল্পের সুভার মাঝে যোগসূত্র স্থাপন করেছে।

৭ নং প্রশ্নের উত্তর ঘ

উদ্দীপকের মূলভাব পোষা প্রাণির প্রতি বাকপ্রতিবন্ধী লতার মমত্ববোধ ‘সুভা’ গল্পের সমগ্র ভাবকে ধারণ করে না- উক্তিটি যথাযথ। বাকপ্রতিবন্ধীরা সব সময় মানুষকে এড়িয়ে চলে। তারা তাদের হীনমন্যতার জন্য আলাদা একটি জগৎ তৈরি করে। সেই জগতের সঙ্গে তারা নিজেকে মানিয়ে নেয়। যা উদ্দীপকের লতা এবং গল্পের সুভার মধ্যে লক্ষ করা যায়।

সুভা গল্পে বাক্শক্তিহীন এক গ্রাম্য কিশোরীর মর্মন্তুদ জীবনবাস্তবতা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বোবা হয়ে জন্মানোর কারণে সবার কাছে সে অবহেলিত। সবাই তাকে জ্ঞান করে বোঝা হিসেবে। তাই প্রকৃতির মাঝে সে খুঁজে নেয় নিরাপদ আশ্রয়। পোষা প্রাণীগুলোর সাথে গড়ে তোলে নিবিড় স্নেহ-মমতার সম্পর্ক।

কিন্তু প্রতিবেশীদের নিন্দার কারণে সুভাকে নিয়ে কলকাতায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তার বারা। ফলে চিরপরিচিত পরিবেশের সাথে সুভার বিচ্ছেদ সূচিত হয়। উদ্দীপকে বর্ণিত লতাও সুভার মতো প্রতিবন্ধিতার শিকার। পোষা গাভীটাকে সে খুব ভালোবাসে। কেবল তাদের সান্নিধ্যেই সে নিজেকে প্রকাশ করতে পারে।

তাই বাবা গাভীকে বিক্রি করতে চাইলে লতা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। এ দিকটি ‘সুভা’ গল্পের সমগ্র দিককে তুলে ধরে না। ‘সুভা’ গল্পে সুভা নামক মেয়েটির জীবনের নানা দিক উঠে এসেছে। সে কীভাবে পারিবারিক ও সামাজিক বঞ্চনার শিকার হয়েছে তা প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু উদ্দীপকে তেমন কোনো ঘটনার উল্লেখ নেই।

সুভার সাথে প্রকৃতির নিবিড় সম্পর্কের যে চিত্র গল্পে ফুটে উঠেছে তেমন কোনো চিত্র উদ্দীপকে নেই। সুভার মতো নির্মম কোনো বাস্তবতা বরণ করে নিতে হয় নি উদ্দীপকের লতাকে। তাই সার্বিক বিবেচনায় বলা যায়, প্রশ্নোক্ত উক্তিটি যথাযথ হয়েছে।

SSC | বাংলা ১ম পত্র | সুভা | সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর | ৬-১০
SSC | বাংলা ১ম পত্র | সুভা | সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর | ৬-১০

এসএসসি পরিক্ষায় কমন উপযোগী প্রশ্নোত্তর:

প্রশ্ন ৮: সীমা পাল অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। জন্ম থেকেই সে অন্ধ । মায়ের ইচ্ছে মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার, প্রতিবেশীরা নিন্দা করছে বিয়ে না দেওয়ায়। কিন্তু সীমার বাবা নিতাই এ কথা সহ্যই করতে পারে না। তার ইচ্ছে মেয়েকে অনেকদূর পর্যন্ত পড়াবে। পাড়াপ্রতিবেশীদের নিন্দা অপবাদের তোয়াক্কা সে করে না। সে জানে এটা মেয়েদের বিয়ের বয়স নয়। সে মনে মনে ভাবে তার অন্ধ মেয়েই একদিন জগৎ আলো করবে।

ক. কোন কাব্যের জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পুরস্কার পান?
খ. মেয়েকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে বাণীকন্ঠের কপোলে অশ্রু গড়িয়ে পড়ল কেন?
গ. উদ্দীপকের নিতাই বাবুর সঙ্গে ‘সুভা’ গল্পের বাণীকণ্ঠের কী ধরনের পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘বাণীকণ্ঠ যদি নিতাই বাবুর মতো মনোভাব পোষণ করত তবে সুভার পরিণতি অন্যরকম হতো’ – উক্তিটির যথার্থতা যাচাই করো।

৮ নং প্রশ্নের উত্তর ক

‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যের জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পুরস্কার পান।

৮ নং প্রশ্নের উত্তর খ

মেয়ের প্রতি অসীম ভালোবাসার জন্য তাকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে বাণীকন্ঠের কপোলে অশ্রু গড়িয়ে পড়ল । বাক্প্রতিবন্ধী সুভাকে কেউ ভালোবাসে না। এমনকি মা-ও তার ওপর এতটাই বিরক্ত যে, তিনি সুভাকে নিজের গর্ভের কলঙ্ক মনে করেন। কিন্তু সুভার বাবা বাণীকণ্ঠ ডাকে অন্য মেয়েদের তুলনায় বেশি স্নেহ করেন।

তিনি বুঝতে পারেন নিজের বাড়ি ছেড়ে কলকাতায় যেতে সুভার অনেক কষ্ট হবে। মেয়ের বেদনায় নিজেও জর্জরিত হয়েছিলেন বলেই তাকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে বাণীকন্ঠের কপোল বেয়ে অশ্রু বারল।

৮ নং প্রশ্নের উত্তর গ

সুভা’ গল্পের বাণীকন্ঠের সাথে উদ্দীপকের নিতাই চরিত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণের দৃঢ়তার দিক থেকে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। পৃথিবীতে প্রত্যেক বাবাই তার সন্তানকে ভালোবাসেন। সমাজের কে কী বলল তা তোয়াক্কা না করে বাবা সন্তানকে শিক্ষিত করতে চান। বাবা মনে করেন প্রতিবন্ধীরাও মানুষ।

তাদেরকে উপযুক্ত করে গড়ে তুললে তারাও একদিন জগৎ আলো করবে। যা উদ্দীপকের নিতাই ও গল্পের বাণীকন্ঠের কাজকর্মে ও মন মানসিকতায় ফুটে উঠেছে। ‘সুভা’ গল্পে দেখা যায়, সুভা সমাজ ও পরিবারে কারো ভালোবাসা না পেলেও তার বাবা বাণীকন্ঠের অনেক ভালোবাসা পায়।

তার বিয়ের জন্য প্রতিবেশীরা এক সময় নিন্দা করতে শুরু করে এবং তাদেরকে একঘরে করে দেওয়ার ভয় দেখায়। বাণীকণ্ঠ তখন তাকে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু উদ্দীপকের নিতাই তার সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে দৃঢ়তা দেখায়। সমাজের মানুষের অযাচিত সমালোচনার ভয়ে সে বিবেচনাবোধ হারিয়ে ফেলে নি।

বরং কন্যার ভালোর জন্য যেটি প্রয়োজন তেমনটা করার পক্ষে অটল থাকে। চারিত্রিক এমন দৃঢ়তা প্রদর্শনের দিক থেকেই উদ্দীপকের নিতাই বাবু ‘সুভা’ গল্পের সুভার পিতা বাণীকন্ঠের চেয়ে আলাদা।

৮ নং প্রশ্নের উত্তর ঘ

বাণীকণ্ঠ যদি নিতাই বাবুর মতো মনোভাব পোষণ করত তবে সুভার পরিণতি অন্যরকম হতো’-উক্তিটির যথার্থতা যাচাই হলো:
১. বাণীকণ্ঠ যদি নিতাই বাবুর মতো দৃঢ় মানসিকতার অধিকারী হতো তবে সুভার জীবনের স্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হতো না।

২. প্রত্যেক সন্তান তার প্রিয় বাবা-মায়ের কাছ থেকে জীবনাদর্শ ও সামনে এগিয়ে যাবার অনুপ্রেরণা পায়। এক্ষেত্রে বাবা-মাকে সন্তানকে নানাভাবে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। সন্তানের মনোবল বাড়ানোর জন্য বাবা নানা কৌশল অবলম্বন করতে পারেন। যা আমরা উদ্দীপকের নিতাই বাবু ও ‘সুভা’ গল্পের সুভার বাবা বাণীকন্ঠের মধ্যে দেখতে পায়।

৩. ‘সুভা’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র সুভা। জন্ম থেকেই বোবা সে। তাই সকলের কাছে সে পায় অবহেলা। এমনকি আপন মা-ও তাকে গর্ভের কলঙ্ক মনে করে। প্রকৃতির সাথে মিতালি করে সুভা গড়ে তোলে তার নিজস্ব ভালোলাগার জগৎ। কিন্তু নিষ্ঠুর সমাজের সংকীর্ণ আচরণ তার জীবনের সেই সৌন্দর্য কেড়ে নেয়।

বাবা বাণীকণ্ঠ সুভাকে খুব ভালোবাসলেও তাকে এমন পরিস্থিতি থেকে রক্ষা করতে শক্ত ভূমিকা রাখতে পারে না। উদ্দীপকে বর্ণিত সীমা জন্মান্ধ। গল্পের সুভার মতোই সে সবার কাছ থেকে অবহেলার শিকার।

গল্পের বাণীকন্ঠের মতোই সীমার বাবা নিতাই নিজের মেয়ের প্রতি স্নেহপরায়ণ। মেয়ের ভবিষ্যতের জন্য সে দৃঢ়চিত্তের পরিচয় দেয়। এমন মনোভাব প্রদর্শনে ব্যর্থ হওয়ায় বাণীকণ্ঠ নিজের মেয়েকে দুর্ভাগ্যজনক পরিণতির দিকে ঠেলে দেয়।

৪. প্রতিবেশীদের নিন্দা সত্ত্বেও মনোবল হারায়নি উদ্দীপকের নিতাই। বরং মেয়ের ভবিষ্যৎ গড়ার বিষয়টিকেই মুখ্য মনে করেছেন। ফলে সীমা তার বাবার কাছ থেকে পেয়েছে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা। কিন্তু ‘সুভা’ গল্পে আমরা দেখি প্রতিবেশীদের নিন্দার কারণে ভীত হয়ে বাণীকণ্ঠ সুভাকে বিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে কলকাতায় নিয়ে যেতে চায়।

সে যদি উদ্দীপকের নিতাইয়ের মতো দৃঢ়চেতা মনোভাবের অধিকারী হতো তবে মেয়ের ব্যাপারে এমন সিদ্ধান্ত নিত না। বরং মানুষের সমালোচনার প্রতিবাদ জানিয়ে মেয়ের সুষ্ঠুভাবে বেড়ে ওঠার জন্য যেমন প্রয়োজন তেমন ব্যবস্থা গ্রহণ করত।

তা হলে সুভার পরিণতি এতটা করুণ হতো না। চিরপরিচিত পরিবেশের সাথে বিচ্ছেদের বেদনায় তাকে ভারাক্রান্ত হতে হতো না। এসব দিক বিবেচনায় তাই বলা যায়, প্রশ্নোক্ত উক্তিটি যথার্থ হয়েছে।

প্রশ্ন ৯: জবা শুধু বোবা নয়, ঈষৎ কালাও। অনেক চেঁচিয়ে বললে তবে শুনতে পায়। সব কথা শোনার দরকারও হয় না তার। নাড়া আর মুখের ভাব দেখেই সব বুঝতে পারে। এ ছাড়া তার আর একটি ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় আছে যার সাহায্যে সে এমন সব জিনিস বুঝতে পারে, এমন সব জিনিস মনে মনে সৃষ্টি করে, সাধারণ বুদ্ধিতে যার মানে হয় না। জবার জগৎ চোখের জগৎ, দৃষ্টির ভিতর দিয়েই সৃষ্টিকে গ্রহণ করেছে সে। শুধু গ্রহণ করে নি, নতুন রূপে নতুন রং আরোপ করেছে তাতে।

ক. সুভার পুরো নাম কী?
খ. সুভার মুখে ভাষা না থাকলেও ভাবের স্ফুরণ ঘটেছে কীভাবে? বুঝিয়ে লেখো ।
গ.উদ্দীপকের জবার নিজস্ব জগৎটির সঙ্গে ভাষাহীন সুভার নিভৃত জগতের সম্পর্ক ব্যাখ্যা করো।
ঘ. মুখের ভাব বৈ আজন্মকাল যাহার অন্য ভাষা নেই তাহার চোখের ভাষা অসীম উদার এবং অতলস্পর্শ গভীর’-সুভা পর্যবেক্ষণ উদ্দীপকের আলোকে বিশ্লেষণ করো।

৯ নং প্রশ্নের উত্তর ক

সুভার পুরো নাম-সুভাষিণী।

৯ নং প্রশ্নের উত্তর খ

অতলস্পর্শ গভীর চোখের ভাষার প্রভাবে সুভার মুখে ভাষা না থাকলেও ভাবের স্ফুরণ ঘটেছে। সুভাষিণী নাম হওয়া সত্ত্বেও সুভার মুখে ভাষা ছিল না। সে ছিল বাক্প্রতিবন্ধী। কিন্তু কালো গভীর চোখের ভাষা কখনো এতটাই উদার হয়ে ওঠে যে, মনের কথার ছায়া মুখেও ফেলে। সুভার ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছিল। মুখে ভাষা না থাকলেও কালো গভীর চোখ কখনো প্রসারিত কখনো মুদিত হয়ে, স্ফুরিত হয়ে উঠত তার মনের ভাব।

৯ নং প্রশ্নের উত্তর গ

উদ্দীপকে জবার নিজস্ব জগৎটি ভাষাহীন সুভার নিভৃত জগতেরই প্রতিচ্ছবি। ভাষাহীন মানুষ তার মনের নিভৃত কোণে ধারণ করে প্রকৃতির মতোই ভাষাহীন অথচ বিবিধ শব্দ ও বিচিত্র গতিময় এক জগৎ, যা নিভৃত মনের ভাবনাকে ভাষার মতোই প্রতিফলিত করে মুখে। একই সাথে সেই নিভৃত জগৎ যেন মানুষের নিজস্ব চেতনা ও বোধকে প্রতিফলিত করে। যা উদ্দীপকের জবা ও ‘সুভা’ গল্পের সুভার মাঝে ফুটে উঠেছে।

‘সুভা’ গল্পে সুভা তার মানসে ধারণ করত এক বিজন মহত্ত্ব। প্রকৃতি যেন সুভার হয়ে কথা বলত। আর সুভাও প্রকৃতির সেই নিস্তব্ধ গভীরতাকে নিজের মধ্যে ধারণ করে তৈরি করেছিল নিজস্ব এক জগৎ। সুভার নিভৃত জগতের মতোই নিজস্ব এক জগৎ উদ্দীপকের জবা ধারণ করত নিজের মাঝে।

দৃষ্টির ভেতর দিয়ে সৃষ্টিকে গ্রহণ করে তাতে যেন সে নতুন রং আরোপ করত। জবা ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়ের দ্বারা এমন সব জিনিসকে ধারণ করত সাধারণভাবে যার কোনো মানে হয় না। গল্পের সুভাও নিজের মধ্যে ধারণ করত তেমনই নিভৃত এক জগৎ, যার পরিপ্রেক্ষিতে উদ্দীপকের জবার নিজস্ব জগৎ ‘সুভা’ গল্পের সুভার নিভৃত জগতের সাথে সম্পর্কিত ।

৯ নং প্রশ্নের উত্তর ঘ

১. মুখের ভাব বৈ আজন্মকাল যাহার অন্য ভাষা নাই তাহার চোখের ভাষা অসীম-উদার এবং অতলস্পর্শ গভীর। সুভা সম্পর্কে এই পর্যবেক্ষণ উদ্দীপকের জবার ক্ষেত্রেও প্রাসঙ্গিক।

২. অঙ্গহানি বা অন্য কোনো ধরনের শারীরিক সীমাবদ্ধতা কখনো কখনো সক্রিয় ইন্দ্রিয়সমূহের অনুভূতিকে তীব্র করে তোলে । প্রাকৃতিকভাবেই শারীরিক প্রতিবন্ধীরা সাধারণত অবশিষ্ট ইন্দ্রিয়ের ব্যবহারে অধিক পারদর্শী হয়ে থাকে। ‘সুভা’ গল্প এবং উদ্দীপকেও এর ব্যতিক্রম ঘটে নি।

৩. উদ্দীপকে বর্ণিত বাক্ ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী মেয়ে জবা তার দৃষ্টিগ্রাহ্য জগতের মাঝেই আপন সীমারেখা টেনে নিয়েছে। দেখার জগৎকে সে বিস্তৃত করেছে আপন কল্পনা ও অনুভূতির প্রাবল্য দিয়ে। ‘সুভা’ গল্পের সুভার জগৎও সীমাবদ্ধ, তবে তা জবার চেয়ে খানিকটা বিস্তৃত, যেহেতু সে শ্রবণ প্রতিবন্ধী নয়।

জবার মতো সুভাও তার অন্তর্জগতে একা। পারিপার্শ্বিকতার সঙ্গেও তার যোগাযোগের মাধ্যম মূলত দৃষ্টি ও শ্রবণ; এছাড়া আছে ভাষাহীন মুখের ভাব। সুভার ওষ্ঠে, মুখমণ্ডলে ভাব অতি গভীরভাবে ফুটে ওঠে। তার চোখের ভাষাও স্পষ্ট ও তীক্ষ্ণ। এসবের মধ্য দিয়ে বহির্জগতের সঙ্গে তার যোগাযোগ ঘটে।

৪. উদ্দীপকের জবা যেমন দৃষ্টির ভিতর দিয়েই সৃষ্টিকে গ্রহণ করেছে, আলোচ্য গল্পের সুভাও তেমনি দৃষ্টিগ্রাহ্য জগতের সঙ্গে আন্তঃসম্পর্ক স্থাপন করেছে মুখের ভাব ও চোখের ভাষার মাধ্যমে। প্রশ্নোল্লিখিত পর্যবেক্ষণ এভাবেই উদ্দীপকের সাথে প্রাসঙ্গিকতা লাভ করেছে।

সুভা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর:

প্রশ্ন ১০ ফুটফুটে কিশোরী শিলা কথা বলতে পারে না। নানা অঙ্গ-ভঙ্গি ও ইশারা ইঙ্গিতে সে মনোভাব প্রকাশ করতে চায়। সবার মনের ভাষা সে বুঝতে পারে তার প্রখর অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে। বাড়ির বাইরে বেরুলেই ছেলেমেয়েরা তাকে ভেংচি কাটে। সে দুর্বোধ্য চিৎকারে তাদেরকে নিবৃত্ত করতে চায়। ব্যর্থ হয়ে মায়ের কাছে এসে কান্না জুড়ে দেয়। বিরক্ত হয় মা। এভাবে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সে একটু একটু করে সবার কাছ থেকে নিজেকে আড়াল করে নেয়। বেশিরভাগ সময় দরজা বন্ধ করে বিষণ্নমনে বসে থাকে।

ক. সুভার মা সুভাকে কীসের কলঙ্ক মনে করেন?
খ. সুভা নিজেকে বিধাতার অভিশাপ মনে করত কেন?
গ. উদ্দীপকে শিলার যে সংবেদনশীলতার পরিচয় পাওয়া যায় সুভার মধ্যে তার প্রতিফলন ঘটেছে, ব্যাখ্যা করো।
ঘ. ‘শারীরিক প্রতিবন্ধকতা মানবিক অনুভূতির অন্তরায় নয়’—উদ্দীপক ও ‘সুভা’ গল্পের আলোকে উক্তিটি মূল্যায়ন করো।

১০ নং প্রশ্নের উত্তর ক

সুভার মা সুভাকে গর্ভের কলঙ্ক মনে করেন ।

১০ নং প্রশ্নের উত্তর খ

প্রতিবন্ধিতার কারণে সুভাকে নিয়ে পরিবার-পরিজনদের উদ্বেগ লক্ষ করেই সুভা নিজেকে বিধাতার অভিশাপ মনে করত। সুড়া কথা বলতে না পারলেও অনুভব করতে পারত সব। এ ব্যাপারটি না বুঝে অনেকে সুভার সামনেই তার ভবিষ্যৎ নিয়ে নানাবিধ দুশ্চিন্তা প্রকাশ করত। ছোটবেলা থেকেই নিজের বিরূপ সমালোচনা শুনতে শুনতেই সুভা নিজেকে বিধাতার অভিশাপ মনে করা শুরু করে।

১০ নং প্রশ্নের উত্তর গ

উদ্দীপকে শিলার যে সংবেদনশীলতার পরিচয় পাওয়া যায় সুভার মাঝে নিজেকে অন্যদের কাছ থেকে আড়ালে রাখার মাধ্যমে তার প্রতিফলন লক্ষ করা যায়।

সংবেদনশীলতা বলতে মানুষের অনুভূতির প্রখরতাকে বোঝায়। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ঘটনায় কষ্ট পাওয়া, আনন্দে উদ্বেল হওয়া সংবেদনশীল মানুষের বৈশিষ্ট্য। সাধারণত শৈশব থেকেই এ বৈশিষ্ট্যটি মানুষের মধ্যে আস্তে আস্তে বিস্তার লাভ করতে থাকে। ‘সুভা’ গল্পে এরকম এক সংবেদনশীল কিশোরীর জীবনগাথাই চিত্রিত হয়েছে।

‘সুভা’ গল্পে বর্ণিত সুভা সংবেদনশীল এক প্রতিবন্ধী কিশোরী। পারিপার্শ্বিকতা থেকে নিজেই বুঝতে পারে যে, সে অবাঞ্চিত। তাই সে নিজেকে অন্য সবার থেকে দূরে সরিয়ে নিজের মতো করে একটি জগৎ তৈরি করে। সেই জগতেই ব্যস্ত থাকে সুভা এবং মনে মনে আশা করে সবাই যেন তাকে ভুলে যায়।

উদ্দীপকের শিলাও বাক্প্রতিবন্ধী এবং তীক্ষ্ণ অনুভূতিসম্পন্ন। সে নিজের প্রতিবন্ধিতা নিয়ে বাইরের পৃথিবীর সাথে খাপ খাওয়াতে না পেরে গুটিয়ে নেয় নিজেকে। বিচ্ছিন্ন-গৃহবন্দি জীবনযাপন করে সে। উদ্দীপকের শিলার এসব বৈশিষ্ট্যই ‘সুভা’ গল্পের সুভার মাঝে প্রতীয়মান। তাই নির্দ্বিধায় বলা যায়, উদ্দীপকের শিলা ও ‘সুভা’ গল্পের সুভা একই রকম সংবেদনশীল চরিত্র।

১০ নং প্রশ্নের উত্তর ঘ

উদ্দীপকের শিলা ও ‘সুভা’ গল্পের সুভা চরিত্রের বিশ্লেষণে বলা যায়, শারীরিক প্রতিবন্ধিতা কখনোই মানবিক অনুভূতির অন্তরায় নয়। বাক্‌প্রতিবন্ধীরাও আমাদের মতো মানুষ। তারা স্বভাবগত হীনমন্যতায় ভোগে এবং লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকার চেষ্টা করে।

কিন্তু আমরা যদি তাদেরকে উপযুক্ত শিক্ষা দিয়ে মূল্যায়ন করতে পারি তাহলে তারাও স্বাভাবিক মানুষের মতো আচরণ করবে। ‘সুভা’ গল্পে বর্ণিত সুভা বাকপ্রতিবন্ধী হলেও বেশ সংবেদনশীল। নিজের জন্মকে অভিশাপ ভেবে সে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে নেয় অন্য সবার থেকে। মিতালি স্থাপন করে প্রকৃতি ও জীবজন্তুর সাথে।

মন খারাপ হলে সে চলে যায় মূক বন্ধুদের নিকট। নির্বাক প্রকৃতির সঙ্গে আপনার আনন্দের জগৎ তৈরি করে নেয়। উদ্দীপকের শিলা গল্পের সুভার মতোই বাক্‌প্রতিবন্ধী। সুভার মতো সেও সকলের অবহেলার শিকার। অন্যদের ভেংচিতে রেগে যায় শিলা। তারপর ধীরে ধীরে যখন বুঝতে শেখে সে অন্যদের থেকে আলাদা এবং অসহায় তখন নিজেকে গুটিয়ে নেয় বাইরের জগৎ থেকে।

উদ্দীপকের শিলা ও ‘সুভা’ গল্পের সুভা দুজনেই প্রতিবন্ধী। তবুও গল্প এবং উদ্দীপকের নানা জায়গায় সুভা ও শিলার মানবিক সংবেদনশীলতার উদাহরণ পাওয়া যায়। সুভা ও শিলা দুজনেই পারিপার্শ্বিকতার ওপর ক্ষোভে নিজেরাই নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে নেয় পারিপার্শ্বিকতা থেকে।

‘সুভা’ গল্পে প্রকৃতি, জীবজন্তু ও প্রতাপকে নিয়ে সুভার মানবিক অনুভূতির স্বাভাবিকতা সুস্পষ্টভাবে লক্ষ করা যায়। শিলার ক্ষিপ্ত হওয়া এবং নিজেকে গুটিয়ে নেওয়া তার সংবেদনশীল মানসিক বৈশিষ্ট্যের প্রকাশ। তাই দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলা যায়, শারীরিক প্রতিবন্ধিতা কখনোই মানবিক অনুভূতি প্রকাশের অন্তরায় নয়। বরং উপযুক্ত পরিবেশ পেলে তারাও মনুষ্যবোধে জাগ্রত হতে পারে।

 

চাকিরর খবর ও নোটিশ পেতে আমাদের ফেইজবুক পেজটি ফলো করুন ও ইউটিউব চ্যানেলটি সাবক্রাইব করুন । অন্যান্য সব তথ্য পেতে আমাদের ওয়েব সাইটের সাথে থাকুন ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button