অন্যান্য

বাংলা ১ম পত্র | বই পড়া গল্পটি হতে সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর | ১৬-১৮

নবম শ্রেণীর বাংলা প্রথম বিষয়টির বই পড়া গল্পটি হতে প্রতিযোগীতা মূলক পরিক্ষায় কমন উপযোগী সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আজকের প্রস্তুতি। সুতরাং পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন ।

প্রমথ চৌধুরী রচিত বই পড়া গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১৬ : আমি লাইব্রেরিকে স্কুল কলেজের ওপরে স্থান দিই এই কারণে যে, এ স্থলে লোকে স্বেচ্ছায় স্বচ্ছন্দচিত্তে স্বশিক্ষিত হবার সুযোগ পায়; প্রতিটি লোক তার স্বীয় শক্তি ও রুচি অনুসারে নিজের মনকে নিজের চেষ্টায় আত্মার রাজ্যে জ্ঞানের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। স্কুল-কলেজ বর্তমানে আমাদের যে অপকার করছে সে অপকারের প্রতিকারের জন্য শুধু নগরে নগরে নয়, গ্রামে গ্রামে বর্তমান অবস্থায় লাইব্রেরি হচ্ছে এক রকম মনের হাসপাতাল । লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করা কর্তব্য। আমি পূর্বে বলেছি যে, লাইব্রেরি হাসপাতালের চাইতে কম উপকারী নয়, তার কারণ আমাদের শিক্ষার

ক. ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের রচয়িতা কে?
খ. লাইব্রেরির স্থান স্কুল-কলেজের উপরে হবার কারণ বুঝিয়ে দাও ।
গ. লেখক লাইব্রেরি স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে যে অভিমত ব্যক্ত করেছেন তার যথার্থতা মূল্যায়ন করো।
ঘ. ‘লাইব্রেরি হচ্ছে এক রকম মনের হাসপাতাল।’-যুক্তিসহ উক্তিটির সত্যাসত্য প্রতিপন্ন করো ।

১৬ নং প্রশ্নের উত্তর ক

উদ্ধৃতাংশটির রচয়িতা স্বনামধন্য লেখক আধুনিক চলিত গদ্যরীতির প্রবর্তক প্রমথ চৌধুরী।

১৬ নং প্রশ্নের উত্তর খ

১. লাইব্রেরির স্থান প্রকৃত অর্থেই স্কুল কলেজেরও উপরে। কারণ সেখানে লোকে স্বেচ্ছায় স্বচ্ছন্দচিত্তে স্বশিক্ষিত হবার সুযোগ পায় ৷

২. আমাদের স্কুল কলেজের শিক্ষাপদ্ধতি ত্রুটিপূর্ণ। যেখানে ছাত্রছাত্রীরা সুশিক্ষা লাভের সুযোগ পায় না। সীমিত পাঠ্যক্রম আর নির্ধারিত পাঠ্যসূচির বিষয়বস্তু মুখস্ত করে তারা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। ফলে তারা শারীরিক ও মানসিক মন্দাগ্নিতে জীর্ণশীর্ণ হয়ে স্কুল কলেজ থেকে বেরিয়ে আসে। এতে করে জাতির প্রাণশক্তি বাড়ছে না বরং স্বশিক্ষিত হবার শক্তি পর্যন্ত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় আত্মার এ অপমৃত্যু রোধকল্পে বিদ্যা তথা জ্ঞান চর্চার কেন্দ্র লাইব্রেরির কোনো বিকল্প নেই।

১৬ নং প্রশ্নের উত্তর গ

১. বিচক্ষণ ও মননশীল লেখক প্রমথ চৌধুরী তাঁর ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে সাহিত্যচর্চার গুরুত্ব সম্পর্কে সুচিন্তিত অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

২. অসুখ হলে মানুষ যেমন হাসপাতালে গিয়ে সুস্থতা লাভ করে তদ্রুপ মানসিক সমস্যা দূর করার জন্য মানুষকে লাইব্রেরিতে গিয়ে বেশি বেশি বই পড়তে হবে, দেখা যাবে সাহিত্যপাঠের ফলে জ্ঞানরাজ্য ও মনোরাজ্য উভয়ই বিকশিত হবে।

৩. ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে লেখক প্রাসঙ্গিকভাবে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় যে সাহিত্যচর্চার সুযোগ নেই সে কথাটি এবং বাঙালির সাহিত্যবিমুখ মানসিকতার স্বরূপটি উন্মোচন করতে প্রয়াসী হয়েছেন। তিনি বলেছেন, লাইব্রেরি হচ্ছে এক রকম মনের হাসপাতাল। কারণ মানুষ শারীরিক ও মানসিক উভয়ভাবেই অসুস্থ হতে পারে।

শারীরিকভাবে অসুস্থ হলে মানুষ যেমন হাসপাতালে যায় ঠিক তেমনি মানুষের মনের অসুখ হলে নিরাময়ের জন্য লাইব্রেরিতে যাওয়া প্রয়োজন। মানুষের মনের সুস্থতার কথা চিন্তা করে লেখক লাইব্রেরিকে হাসপাতাল বলেছেন। একই কারণে লেখক লাইব্রেরিকে স্কুল-কলেজেরও ঊর্ধ্বে স্থান দিতে রাজি।

কারণ স্কুল-কলেজে নির্দিষ্ট সিলেবাস পড়ে পাশ করার জন্য বিদ্যা অর্জন করার ফলে শিক্ষার্থী প্রকৃত জ্ঞান অর্জন থেকে পিছিয়ে পড়ে। আর শিক্ষার্থীরা যদি নিয়মিত লাইব্রেরিতে গিয়ে জ্ঞান চর্চা করে তবে মনের অসুস্থতা কমে যায় । কারণ সেখানে সে তার পছন্দ ও সামর্থ্য অনুযায়ী জ্ঞানরাজ্যের বহুবিধ শাখা-প্রশাখায় বিচরণ করতে পারে। এজন্য লেখক লাইব্রেরি স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা ব্যক্ত করেছেন।

১৬ নং প্রশ্নের উত্তর ঘ

১. প্রশ্নোক্ত উক্তিটি যথাযথ।

২. ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের লেখক প্রমথ চৌধুরীর মতে, আমাদের প্রচলিত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যবস্থা সার্টিফিকেট নির্ভর। এতে স্কুল- কলেজে ছেলে-মেয়েরা যায় কয়েকটি শ্রেণির ধাপ অতিক্রম করে কোনমতে সার্টিফিকেট অর্জন এবং এ সার্টিফিকেটের সহায়তায় জীবনে ভালো-মন্দ একটি চাকরি জোগাড় করার জন্য ।

৩. স্কুল-কলেজে কয়েকটি পাঠ্যগ্রন্থের পাতায় পড়ালেখা সীমাবদ্ধ এবং গুটিকয়েক প্রশ্নের উত্তর মুখস্থ করে উত্তরপত্রে উগড়ে দিলে উদ্দেশ্য হাসিল হয়ে যায়।

আর এ উদ্দেশ্য অর্জনে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের জোর করে বিদ্যা গেলানোর দায়িত্ব পালন করেন। অথচ শিক্ষকের কাজ বলপূর্বক বিদ্যা গেলানো নয় বরং শিক্ষার্থীর মনে জানস্পৃহা জাগিয়ে তোলা, যাতে সে নিজেই স্বাধীনভাবে আনরাজ্যে বিচরণ করতে সক্ষম হয়।

শিক্ষা ব্যবস্থার এ ত্রুটির কারণেই আমাদের দেশে পাশ করা লোকের অভাব না থাকলেও প্রকৃত শিক্ষিত লোকের খুব বেশি অভাব। শিক্ষা ব্যবস্থার এ ত্রুটির কারণে মানুষের মন নির্জীব, জ্ঞানশূন্য ও অনুসার

৪. প্রচলিত শিক্ষা আত্মার বিকাশ না ঘটিয়ে বরং আত্মার অপমৃত্যুই ঘটায়। এ বাস্তবতার পটভূমিতে হাসপাতালের মতো ভূমিকা পালন করাতে পারে লাইব্রেরি। কারণ একমাত্র লাইব্রেরিতেই থাকে স্বাধীনভাবে নিজ নিজ পছন্দমত জ্ঞানচর্চার সুযোগ লাইব্রেরির জ্ঞানরাজ্যে অবগাহন করে যে কেউ আত্মিক অপমৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেতে পারে, মনকে করে তুলতে পারে সজীব-সতেজ-প্রফুর। তাই মানুষের মনের হাসপাতাল হিসেবে লাইব্রেরি সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলা ১ম পত্র | বই পড়া গল্পটি হতে সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর | ১৬-১৮
বই পড়া গল্পটি হতে সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

প্রতিযোগীতা মূলক পরিক্ষায় কমন উপযোগী সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তরঃ

প্রশ্ন ১৭ মানবের ইতিহাসের পাতায় পাতায় লেখা রয়েছে যে মানুষের প্রাণ সম্পর্ক যত হারায় ততই তা দুর্বল হয়ে পড়ে। মনকে সজাগ ও সবল রাখতে না পারলে জাতির প্রাণ যথার্থ স্ফুর্তিলাভ করে না; তারপর যে জাতি যত নিরানন্দ সে জাতি তত নির্জীব। একমাত্র আনন্দের স্পর্শেই মানুষের মনপ্রাণ সজীব, সতেজ ও সরাগ হয়ে ওঠে। সুতরাং সাহিত্যচর্চার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হওয়ার অর্থ হচ্ছে, জাতির জীবনীশক্তির হ্রাস করা।

ক. লাইব্রেরি কীসের জন্য প্রয়োজন?
খ. শিক্ষা বিস্তারে লাইব্রেরির ভূমিকা কী?
গ. যে জাতি যত নিরানন্দ, সে জাতি তত নির্জীব।’- ব্যাখ্যা করো।
ঘ. সাহিত্যচর্চার আনন্দ জাতীয় জীবনে কী প্রভাব বয়ে আনে বলে তুমি মনে কর? ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের আলোকে লেখো।

১৭ নং প্রশ্নের উত্তর ক

লাইব্রেরি সাহিত্যচর্চার জন্য প্রয়োজন।

১৭ নং প্রশ্নের উত্তর খ

শিক্ষার্থীদের মনোরাজ্য বিস্তারের জন্য লাইব্রেরির ভূমিকা ব্যাপক। শিক্ষার্থীদের শিক্ষিত করে তোলার জন্য যেমন স্কুল-কলেজের প্রয়োজন ঠিক তেমনি জাতিকে সুশিক্ষিত ও প্রাজ্ঞজ্ঞ করে গড়ে তোলার জন্য লাইব্রেরির প্রয়োজন। লাইব্রেরি হলো জ্ঞানের ভান্ডার এই জ্ঞান আহরণ করে সমগ্র জাতি নিজেকে সুশিক্ষিত করে গড়ে তুলতে পারে।

১৭ নং প্রশ্নের উত্তর গ

বিশিষ্ট প্রবন্ধকার প্রমথ চৌধুরীর ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে বই পড়ার সঙ্গে ব্যক্তি ও জাতির সম্পৃক্ততার কথা বলেছেন। লেখক হলে করেন, কোনো জাতির উন্নতির মাপকাঠি হলো শিক্ষা। শিক্ষা ছাড়া কোনো জাতি উন্নতির স্বর্ণশিখরে উঠতে পারে না।

তাই বলা হয়, যে জাতি যত শিক্ষিত সে জাতি তত উন্নত, তারা অর্থনৈতিকভাবেও শক্তিশালী। অন্যদিকে জ্ঞানচর্চায় যাদের দৈন্যদশা রয়েছে তাদের আর্থিক দীনতাও প্রকট। ধন-সম্পদের দিক থেকে যেখানে ‘লক্ষ্মী’ হওয়ার কথা, সেখানে ধনের দিক থেকে ‘ভবানী’ হওয়ার অর্থ হচ্ছে সার্বিকভাবে দুরবস্থা।

তাই আর্থিকভাবে যদি কেউ উন্নত না থাকে তাহলে তার কোন আনন্দ থাকে না। আবার যথার্থ শিক্ষা অর্জিত না হলে আর্থিকভাবেও উন্নতি লাভ করা যায় না। তাই বলা হয়- যে জাতি যত নিরানন্দ, সে জাতি তত নির্জীব। 

১৭ নং প্রশ্নের উত্তর ঘ

১. সাহিত্যচর্চার আনন্দ জাতীয় জীবনে ইতিবাচক সুফল বয়ে আনে বলে আমি মনে করি ।

২. প্রমথ চৌধুরী তাঁর ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে বই পড়ার প্রয়োজনীয়তা বর্ণনা প্রসঙ্গে যুক্তিপূর্ণ আলোচনা করেছেন। প্রবন্ধটি লেখে গভীর চিন্তা ও সৃজনশীল মানসের এক অনন্য ফসল।

সাহিত্যচর্চার আনন্দ জাতীয় জীবনে যা বয়ে আনে সে সম্পর্কে লেখক মনে করেন, সাহিত্যের ব্যাপক প্রসার ও চর্চার মধ্য দিয়ে জাতি প্রকৃত শিক্ষিত মানুষ পেতে পারে।

৩. ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে লেখক বলেছেন, সাহিত্যটা যুগে যুগে পাঠকের হাতে তুলে দেন সৃষ্টির অমৃতপাত্র। পাঠক নির্বি রসানন্দে হন আবিষ্ট। সহৃদয় পাঠকের রস আস্বাদনেই সাহিত্য সৃষ্টির সার্থকতা।

যুগ-যুগান্তর ধরে বহির্বিশ্বের সর্বত্র নিত্যনতুন রূপের অহরহ লীলা চলছে, কবি-সাহিত্যিকের দল ধ্যানমগ্নচিত্তে তাকেই হৃদয়বৃত্তির নানা রঙে, নানা ছাঁচে, রকম করে সৃষ্টি করেছে। ফলে সাহিত্যের মধ্য দিয়ে মানুষ সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা প্রকাশ করেছে। সাহিত্যগুলো হলো মানুষের পুঞ্জিভূত জ্ঞান, পাণ্ডিত্য, মনীষা, মেধা ও প্রজ্ঞার ফল। উদ্দীপকেও একই কথা বলা হয়েছে।

৪. উদ্দীপক ও ‘বই পড়া’ প্রবন্ধ তুলনামূলক আলোচনা করে বলা যায় যে, সাহিত্য মানুষের মনের দাবি রক্ষা করে। রবীন্দ্রনাথ করে তার ভবিষ্যৎ জীবন গড়ে তোলে। বলেছেন, যে শিক্ষার মাঝে আনন্দ নেই, সে শিক্ষা প্রকৃত শিক্ষা হতে পারে না। 

তাই বলা যায় যে, সাহিত্যই যুগে যুগে পাঠক মনে দিয়েছে অপার তৃপ্তি। ছিন্ন করেছে সামাজিক তুচ্ছতার ক্ষুদ্রতর বন্ধন। ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। ক্ষণকালের জীবন মিশে গেছে অনন্ত জীবনে। 

প্রশ্ন ১৮: কাব্যামৃতে যে আমাদের অরুচি ধরেছে সে অবশ্য আমাদের দোষ নয়, আমাদের শিক্ষার দোষ। যার আনন্দ নেই সে নির্জীব একথা যেমন সত্য, যে নির্জীব তারও আনন্দ নেই, সে কথাও তেমনি সত্য। আমাদের শিক্ষাই আমাদের নির্জীব করেছে। জাতির আত্মরক্ষার জন্য এ শিক্ষার উলটো টান যে আমাদের টানতে হবে, এ বিষয়ে আমি নিঃসন্দেহ। এই বিশ্বাসের বলেই আমি স্বেচ্ছায় সাহিত্যচর্চার পক্ষে এত বাক্য ব্যয় করলুম।

ক. প্রমথ চৌধুরী কত সালে মৃত্যুবরণ করেন?
খ. শিক্ষা কীভাবে আমাদের নির্জীব করেছে?
গ. ‘শিক্ষার উল্টো টান’- কথাটি বুঝিয়ে দাও ৷
ঘ. সাহিত্যচর্চার পক্ষে লেখক যেসব যুক্তি তুলে ধরেছেন তা সংক্ষেপে নিজের ভাষায় লেখ।

১৮ নং প্রশ্নের উত্তর ক

প্রমথ চৌধুরী ১৯৪৬ সালে মৃত্যুবরণ করেন।

১৮ নং প্রশ্নের উত্তর খ

১. মুখস্ত নির্ভর আনন্দহীন শিক্ষা আমাদের আত্মাকে দিনে দিনে নির্জীব করেছে।

২. আমাদের স্কুল-কলেজের শিক্ষা হলো নির্দিষ্ট সিলেবাস-নির্ভর মুখস্থবিদ্যা। সেখানে গুরুরা শিক্ষার্থীদের নোট দেয়। ছাত্র- ছাত্রীরা সেই নোট মুখস্থ করে পরীক্ষায় পাশ করে। এ শিক্ষায় স্বশিক্ষিত হবার সুযোগ নেই।

নেই শিক্ষার্থীর সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ কিংবা আত্ম-জাগরণের কোন ব্যবস্থা নেই। ফলে এ শিক্ষা আমাদের নিকট নিতান্তই আনন্দহীন একটি বিষয় প্রকৃতপক্ষে আনন্দহীন এ শিক্ষা গ্রহণ ও প্রদান পদ্ধতিই আমাদের চেতনাকে নির্জীব করেছে ।

১৮ নং প্রশ্নের উত্তর গ

প্রাবন্ধিক প্রমথ চৌধুরী ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে আমাদের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার নানা দিক উপস্থাপন প্রসঙ্গে বলেছেন, মানুষ বিদ্যা শিক্ষা গ্রহণ করে জীবন উন্নত করার জন্য। কিন্তু আমাদের দেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা তার উল্টো। সেখানে শিক্ষা গ্রহণ করে জীবন উন্নত করা যায় না বরং উল্টোভাবে যেতে হয়।

কারণ আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় মৌলিকত্ব নেই। স্কুল-কলেজে থাকে নির্দিষ্ট সিলেবাস, আর থাকে গুরু কর্তৃক প্রদত্ত নোট মুখস্থ করার প্রতিযোগিতা। শিক্ষার্থীরা এটা পড়ে পরীক্ষায় পাশ করে আর নিজেকে শিক্ষিত ভাবে। কিন্তু এই শিক্ষা নিয়ে কোথাও দাঁড়ানো যায় না। তখন হয় শিক্ষার দোষ।

আসলে প্রকৃত শিক্ষা অর্জন করতে হলে একজন শিক্ষার্থীকে অনেক পড়তে হয়। যা আমাদের দেশে প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় কোনভাবেই সম্ভব নয়। তাই আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে উল্টো বলা হয়েছে।

১৮ নং প্রশ্নের উত্তর ঘ

১. বাংলা সাহিত্যে আধুনিক গদ্যধারার প্রবর্তক প্রমথ চৌধুরী তাঁর ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে সাহিত্যচর্চার সপক্ষে যুক্তি দিয়েছেন । 

২. রোগ, শোক, দুঃখ-তাপ এদেশের মানুষের নিত্যসঙ্গী, তাদের সাহিত্যচর্চা করার কথা বলা নিরর্থক, কিন্তু প্রমথ চৌধুরী মনে করেন জ্ঞানে বড় না হলে ধনে বড় হওয়া যায় না। কেননা, অন্তরের জিনিসকে বাইরে, ভাবের জিনিসকে ভাষায়, ক্ষণকালের জিনিসকে চিরকালের করে রাখাই সাহিত্যের কাজ।

৩. সাহিত্যস্রষ্টা যুগে যুগে পাঠকের হাতে তুলে দেন সৃষ্টির অমৃতপাত্র। পাঠক আনন্দচিত্তে সে অমৃত গ্রহণ করে। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সাহিত্যগুলো হলো মানুষের পুঞ্জিভূত জ্ঞান, পাণ্ডিত্য, মনীষা, মেধা ও প্রজ্ঞার মিলন।

আমাদের দেশের ভ্রান্ত শিক্ষার জন্য সাহিত্য সম্পর্কে রয়েছে মানুষের অনীহা, ফলে আমাদের দেশের কিছু সংখ্যক মানুষ শিক্ষিত হয়েও নিজেকে বিকশিত করতে পারে না। তাই মানুষের মাধ্যমে জাতির চিন্তার মুক্তি সম্ভব করে তোলার লক্ষ্যে লেখক মুক্তভাবে সাহিত্যচর্চার প্রতি গুরুত্ব

৪. প্রকৃত শিক্ষিত হওয়ার অন্যতম শর্ত হচ্ছে নির্দিষ্ট বইয়ের বাইরে সাহিত্যচর্চা করতে হবে। সাহিত্য হচ্ছে জীবনের সর্বপ্রধান জ্ঞানভাণ্ডার। সাহিত্যে রয়েছে জগৎ ও জীবনের বিচিত্র তত্ত্ব, সৌন্দর্য ও তাৎপর্যের কথা। সাহিত্য আমাদের মনকে প্রসারিত করে তোলে।

স্কুল-কলেজের শিক্ষা মানুষের অর্থনৈতিক দিক খুলে দিতে পারে, কিন্তু মানসিক দিক খুলে দিতে পারে না। মনের দরজা খুলতে হলে মানুষকে সাহিত্যের জ্ঞান লাভ করতে হবে। সাহিত্যচর্চা আমাদের মনকে যাবতীয় সংকীর্ণতা কলুষতা থেকে মুক্ত করে সুন্দর, পবিত্র ও প্রসন্ন করে তোলে। সাহিত্য মানুষের মনের দাবি রক্ষা করে।

দেহের দাবি যেমন খাদ্য তেমনি মনের দাবি সাহিত্যচর্চা। সাহিত্যচর্চা মনে আনন্দ ও সৌন্দর্য আনে। মনের সাথে আনন্দের সংযোগ না থাকলে মানুষের চিত্ত দুর্বল হয়ে পড়ে। সুন্দর ও মহৎ জীবন গঠন এবং প্রগতিশীল জগতের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য সাহিত্যচর্চা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই বলা যায় যে, সাহিত্য পাঠ যুগে যুগে মানুষের মনে আনন্দ দিয়েছে, চিন্তার, বিকাশ, ঘটিয়েছে।

 

চাকিরর খবর ও নোটিশ পেতে আমাদের ফেইজবুক পেজটি ফলো করুন ও ইউটিউব চ্যানেলটি সাবক্রাইব করুন । অন্যান্য সব তথ্য পেতে আমাদের ওয়েব সাইটের সাথে থাকুন ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button