অন্যান্য

বাল্যবিবাহ কে না বলুন | Say NO to Child Marriage

বাল্য বিবাহ এই নামটি সকলের কাছে পরিচিত একটি নাম।কেননা বাল্যবিবাহের ফলে নষ্ট হয়েছে উঠতি বয়সি তরুণ-তরুণীদের জীবন। এমনকি হারিয়ে ফেলে নিজের সুন্দর ভবিষ্যৎ। বাল্য বিবাহের কারণে অকালে জীবন হারিয়ে অনেকেই।

বাল্য বিবাহ কীঃ

আসলে বাল্য বিবাহ বলতে বোঝায় ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়ের সাথে ২১ বছরের কম বয়সী ছেলের সাথে বিয়ে দেওয়া। এক কথায় বলা যেতে পারে – অপ্রাপ্ত বযস্ক ব্যক্তির (মেয়ে বা ছেলের) আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক ভাবে বিয়ে দেওয়াকে বাল্য বিবাহ বলা হয়।

বাল্য বিবাহের প্রভাবঃ

অতীত কাল থেকেই বাল্য বিবাহের প্রচলন আছে। বর্তমান সময়ে এর কিছুটা হ্রাস পেলেও আবার দিনে দিনে এটি বেড়েই চলেছে। বাল্য বিবাহের প্রভাবে ধ্বংস হয়েছে অনেক পরিবার ও নষ্ট হয়েছে অনেক তরুণ তরুণীদের জীবন। কম বয়সী মেয়ের সাথে যদি বয়স্ক ছেলের বিয়ে দেয় তাহলে ঐ মেয়েটির সাথে ছেলেটির মতের মিল হবেনা এতে করে সংসারে অশান্তির সৃষ্টি হবে। আবার মাতৃকালীন বা গর্ভধারণ কালীন সময়ে যে সন্তানটি জন্ম গ্রহণ করবে ঐ মা ও সন্তানটি স্বাস্থ্য ও পুষ্টিহীন রোগে আক্রান্ত হবে। ফলে মা ও শিশুর জীবন মৃত্যুর মূখে ঢলে পড়বে।

বাল্যবিবাহ কে না বলুন | Say "NO" to Child Marriage
বাল্যবিবাহ কে না বলুন | Say “NO” to Child Marriage

বাল্য বিবাহ হওয়ার কারণঃ

দারিদ্রতাঃ দারিদ্রতা বাল্য বিবাহের হওয়ার অন্যতম একটি সমস্যা বলে বিবেচিত। দারিদ্রতার কারণে বাবা মা তাদের ছেলেমেয়েদের অল্প বয়েসের বিয়ে দিতে বাধ্য হয়। কারণ আমাদের সমাজে কিছু কুসংস্কার আছে যেমন অল্প বয়সে ছেলের বিয়ে দিলে শ্বসুর বাড়ির লোকজনের কাছ থেকে বহু পরিমানে যৌতুক পাওয়া যায়।

একই কথা মেয়ের ক্ষেত্রে ভিন্ন রকম, মেয়ের বাবার মায়ের ভিতরে একটা ভ্রান্ত সৃষ্টি হয়ে থাকে বাবা ও মা মনে করেন অল্প বয়সে মেয়ের বিয়ে দিলে তাদের দায়িত্ব শেষ যায়। ফলে ছেলে ও মেয়ে কে বড় করে তোলার জন্য বেশি ব্যায় করতে হয় না। কিছু কিছু লোকের ধারণা ছেলের বিয়ে দিয়ে শ্বসুর বাড়ি থেকে যৌতুক নিয়ে সংসারের অভাব দূর করবো। এটা হলো আমাদের ভিতের একটি ভ্রান্তধারণা।

অজ্ঞতা ও অশিক্ষাঃ আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ গ্রামে বাস করে এতে করে তাদের ভিতর এখন পর্যন্ত শিক্ষার আলো জ্বলে উঠেনি।শিক্ষার আলো জ্বলে না ওঠার কারণে সাধারণ মানুষের ভিতর একটি কুসংস্কার থেকেই যায় সেটা হলো অল্প বয়ে ছেলের বিয়ে দিয়ে মেয়ের বাড়ি থেকে প্রচুর পরিমানে অর্থ হাসিল করা।

বাংলাদেশে বাল্য বিবাহঃ

বাংলাদেশে শতকরা ৮০ জন লোকই গ্রামে বাস করে আর এই সব মানুষের জীবিকার মূল উৎস হলো কৃষি। যারা কৃষি কাজের সাথে জড়িত তাদের ভিতরে প্রায়ই দেখা যায় অভাব অনাটন । এছাড়াও গ্রাম অঞ্চলের পরিবার গুলোর সদস্য সংখ্যা বেশি হয়ে থাকে। আর গ্রামে বাস করার কারণে এদেশের সঠিক শিক্ষার প্রভাব এখন পর্যন্ত মানুষের পড়েনি। অনেক সময় পরিবারে সদস্য সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণে অল্প বয়সে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া হয়ে থাকে । ফলে বিভিন্ন ধরণের পারিবারিক, সামাজিক সমস্যার সৃষ্টি হয়ে। বাংলাদেশেও অতিত কাল থেকেই বাল্য বিবাহ প্রচলিত আছে।

বাংলাদেশের প্রথম বাল্য বিবাহ মুক্ত জেলা মেহেরপুরঃ

দারিদ্র, অশিক্ষা ও কুসংস্কারের কারণে বাল্য বিবাহ শুধুমাত্র আন্তরিকতা দিয়ে বাল্য বিবাহমুক্ত জেলা ও দেশ গড়া যায় জানিয়েছিলেন মন্ত্রী পরিষদ সচিব শফিউল আলম।২০১৬ সালের ২৭ ফেব্রয়ারি মেহেরপুর জেলাকে বাল্যবিবাহ মুক্ত জেলা হিসেবে ঘোষণা করেন মন্ত্রী পরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।(সংগৃহীত)

সবশেষ বলা যায়,শুধুমাত্র আন্তরিকতা ও সচেতনের মাধ্যমে বাল্য বিবাহ মুক্ত দেশ গড়া যায় । বাল্য বিবাহ বিবাহ মুক্ত দেশ গড়তে হলে সকলের ভিতরে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে এবং সকলকে বাল্য বিবাহের সুফল ও কুফল সম্পর্কে জানতে হবে। স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের ভিতরে সচতেন সৃষ্টি করতে হবে । রাষ্ট্রীয়ভাবে আইন প্রয়োগের মাধ্যমে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে ।

 

চাকিরর খবর ও নোটিশ পেতে আমাদের ফেইজবুক পেজটি ফলো করুন ও ইউটিউব চ্যানেলটি সাবক্রাইব করুন । অন্যান্য সব তথ্য পেতে আমাদের ওয়েব সাইটের সাথে থাকুন ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button